জলবায়ু পরিবর্তনে পাল্টে যেতে পারে কৃষি ক্যালেন্ডার

দেশের আবহাওয়া গত চার বছরে বেশ অস্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। বর্ষায় বৃষ্টি কমছে আবার অসময়ে হচ্ছে অতিভারী বৃষ্টি। আবহাওয়া অধিদপ্তরে তথ্যানুযায়ী, ২০২০ সালে ২০ ভাগ বেশি বৃষ্টি হলেও ২০২১-এ কম হয়েছে ৭৯ ভাগ। চলতি বছর বৃষ্টি কম হয়েছে ৮১ ভাগ।

এ পরিস্থিতিতে উচ্চ তাপমাত্রা, খরা, লবণাক্ততা, অসময়ের ভারী বৃষ্টিতে দেশের কৃষি ক্যালেন্ডার বদলে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন জলবায়ু গবেষকরা। তাদের ধারণা, আবহাওয়ার অসম আচরণে আগামী দুই যুগ পর উত্তর-মধ্যাঞ্চলের ২২ জেলায় ফসলের উৎপাদন ২৫ শতাংশ কমতে পারে। তাই খাদ্য ঘাটতি মোকাবেলায় দ্রুত পরিকল্পনা গ্রহণ জরুরি।

জলাধার আর বন উজাড়ে বিপর্যয়ের মুখে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ২২ জেলা। উত্তরে খরার মুখে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, রংপুর, জয়পুরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ ৮ জেলা। খুলনা বিভাগে চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহসহ চার জেলা, সঙ্গে আছে ঢাকা বিভাগের গাজীপুরও। অন্যদিকে খরা ছাড়াও বন্যার ঝুঁকিতে রাজশাহী, নাটোর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও কুষ্টিয়া। একই সংকট চট্টগ্রামের ৩ পার্বত্য জেলায়।

অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব আর্থ এন্ড প্ল্যানেটারি সায়েন্সস বিভাগের পরিচালক ড. আশরাফ দেওয়ান বলেন, ক্রপ ক্যালেন্ডার যেগুলো আছে, সেগুলো বছরের পর বছর ব্যবহার হচ্ছে, অতএব এগুলোর টাইমিং নষ্ট যাওয়া স্বাভাবিক। তাই নতুন করে এগুলো তৈরি করতে হবে। নতুন করে চিন্তা করতে হবে। বাংলাদেশ যদি তার ক্লাইমেট চেঞ্জকে অ্যাড্রেস করতে না পারে, পরিকল্পনা করতে না পারে তাহলে সামনে অনেক বিপদের সম্মুখীন হতে পারে।

দেশের বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত প্রতিবছর প্রায় ৮ দশমিক ৪ মিলিমিটার হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে বর্ষার আগে ও পরে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়লেও শীতকালে এর পরিমাণ ১ দশমিক ৩ মিলিমিটার হারে কমছে। জলবায়ু পরিবর্তনের এই প্রভাবে ভবিষ্যত খাদ্য ঘাটতির আংশকা তীব্র হবে।

জলবায়ু গবেষক ড. শামসুদ্দোহা বলেন, আমরা ম্যাপ তৈরি করেছি। কিন্তু প্রয়োগে যেতে পারিনি। অর্থাৎ প্রয়োগের জন্য যে জবাবদিহীতা ও সুশাসন প্রয়োজন ছিল সেটা আমরা অ্যাভোয়েড করেছি। ট্রাস্ট ফান্ডের টাকার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারিনি। প্রচুর মানুষ এখনও ঝুঁকিতে আছে, তাদের কথা বলতে পারিনি।