ব্যক্তি উদ্যোগে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের হরিখোলা চাকমা পল্লীতে ‘গোল মরিচের’ চাষ হচ্ছে। উপজাতীয় নেতা মনিস্বপন চাকমা নিজ বসত বাড়ির ভিটায় করেছেন ব্যতিক্রমধর্মী এই চাষ। হরিখোলা চাকমা পল্লীরই বাসিন্দা উৎসাহী যুবক মনিস্বপন।
খবর পেয়ে সরেজমিন হরিখোলা চাকমা পল্লীতে গিয়ে দেখা গেছে, মনিস্বপন চাকমা ও তার স্ত্রী মিনিকা চাকমার করা চোখ জুড়ানো গোল মরিচ বাগান। তারা নিজেরাই বসত ভিটায় গোল মরিচ আবাদ করে দেখিয়ে দিয়েছেন আলাদা ভুমি ব্যবহার না করেই কিভাবে অতি সহজে গোল মরিচ আবাদ করা যায়।
হরিখোলা চাকমা পল্লীর ঐতিহ্যবাহী বৌদ্ধ বিহারের সামান্য পশ্চিম-দক্ষিণে টিলার উপর মনিস্বপন চাকমার বসতভিটা। কাঠের বেড়া টিনের ছাউনী ছিমছাম বাড়ি। বসতভিটায় রয়েছে বিভিন্ন জাতের প্রচুর ফলজ-বনজ গাছ। প্রত্যেকটা গাছেরই গোড়ায় গোল মরিচের চারা। কোনটা বড় আর কোনটা ছোট। গোল মরিচের গাছ লতা জাতীয়। থোকায় থোকায় গোল মরিচ। কিছু পাকা, কিছু আধা পাকা আর কিছু কাঁচা। দেখলে চোখ-মন জুড়িয়ে যায়।
প্রচার বিমূখ মনিস্বপন জানান, শখের বশে পার্বত্য এলাকা থেকে চারা এনে লাগিয়ে সুফল পেয়েছেন। সারা বছরই বিশেষতঃ বর্ষাকালে বেশী গোল মরিচ ধরে। চাষাবাদের জন্য আলাদা জমির প্রয়োজন হয়না। সার এবং সেচের তেমন বেশী প্রয়োজন হয়না। পাকলে ছিঁড়ে এনে শুকানো হয়। সারা বছরই এভাবে চলে। উৎপাদিত গোল মরিচ আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের দিয়েও প্রচুর পরিমাণ বিক্রি করা যায়। প্রতি বছর গোল মরিচ বিক্রি করে প্রচুর আয় হয়।
মনিস্বপন চাকমা কক্সবাজার জেলা জাতীসত্বা মুক্তি সংগ্রাম পরিষদের চেয়ারম্যান, হরিখোলা বৌদ্ধ বিহার কমিটির সভাপতি, কৃষকলীগ টেকনাফ উপজেলা শাখার স্থানীয় সরকার বিষয়ক সহ-সম্পাদক এবং হোয়াইক্যং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সদস্য।
তার ব্যস্ততায় স্ত্রী মিনিকা চাকমা দেখা-শোনা করেন। তার মতে যে কেউ স্বল্প পুঁজিতে মশলা জাতীয় ভেষজ এই গোল মরিচের চাষাবাদ করে অতি সহজে স্বাবলম্বী হতে পারে। এপর্যন্ত সরকারী-বেসরকারী কোন কর্মকর্তা বা সংস্থা তার ‘গোল মরিচ’ বাগান পরিদর্শন করতে আসেননি বলে জানা গেছে। তাছাড়া টেকনাফের আর কোথাও গোল মরিচের বাগান আছে কি-না তা জানা যায়নি।