তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া শুধু একটি রাজনৈতিক দলের নেত্রীই ছিলেন না; তিনি ছিলেন বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনামলে বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন সংগ্রাম ও প্রতিরোধের এক অনন্য প্রতীক। তার আপসহীন ভূমিকা দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামে জাতিকে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। বেগম জিয়ার ইন্তেকালে জাতি তার এক মহান অভিভাবককে হারাল। দেশ ও জাতির প্রতি তার অবদান জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।
শোকবার্তায় প্রফেসর ইউনূস আরও উল্লেখ করেন, ১৯৮২ সালে সাধারণ গৃহবধূ থেকে রাজনীতির মাঠে এসে বেগম খালেদা জিয়া স্বৈরশাসক এরশাদের ৯ বছরের শাসনের পতন ঘটাতে প্রধান ভূমিকা রেখেছিলেন। তার হাত ধরেই দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র ও বহুদলীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতি সংহত হয়েছে। বিশেষ করে মেয়েদের জন্য অবৈতনিক শিক্ষা ও উপবৃত্তি চালু করে তিনি নারী শিক্ষার অগ্রগতির ক্ষেত্রে এক মাইলফলক স্থাপন করেছেন।
বেগম জিয়ার অভাবনীয় রাজনৈতিক সাফল্যের কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি তার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে কখনো কোনো নির্বাচনে পরাজিত হননি। ১৯৯১ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি অর্থনৈতিক উদারীকরণের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির মজবুত ভিত্তি স্থাপন করেন। অথচ এই সাফল্যের কারণেই তাকে চরম রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে দীর্ঘদিন কারাবরণ করতে হয়েছে।
মরহুমার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার ও বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। একইসঙ্গে তিনি এই শোকের মুহূর্তে দেশবাসীকে শান্ত থেকে ধৈর্য ধারণের এবং বেগম খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া করার আহ্বান জানান।