জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য ডিসি সম্মেলনে কোনো প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়নি। এমন কোনো চিন্তাও সরকারের নেই।
'সন্তানদের পড়াশোনার জন্য পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় চেয়েছেন আমলারা' এমন একটি বিষয় নিয়ে কিছুদিন ধরে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (৫ মে) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ফরহাদ হোসেন বলেন, সরকারের অগ্রাধিকারে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে। সরকার অগ্রাধিকার ঠিক করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিচ্ছে।
সর্বশেষ জেলা প্রশাসক সম্মেলনে ডিসিরা আমলাদের সন্তানদের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছেন। এটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে।
এ বিষয়ে মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘আমার যতদূর মনে পড়ে সেখানে অনেকগুলো বিষয় এসেছিল। প্রধানমন্ত্রীর সামনে যখন ডিসিরা আসেন, তখন তারা দেশের নির্বাহী প্রধানদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগটা পান। এটা তাদের জন্য একটা বড় সুযোগ। অনেক বিষয় সেখানে আসে। অনেক চাওয়া, অনেক পাওয়া, অনেক প্রত্যাশার বিষয় উঠে আসে। সেখানে বিভিন্নজন বিভিন্ন রকম প্রশ্ন করেছেন।’
প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের বিশেষায়িত জ্ঞান অর্জনের জন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে কয়েক বছর আগে ডিসি সম্মেলনে প্রস্তাব উঠেছিল জানিয়ে জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে এবারো আলোচনা হয়েছে। কিন্তু সরকার এখনি বিষয়টি নিয়ে সক্রিয়ভাবে চিন্তা করছে না।
আমলাদের সন্তানদের পড়ালেখার বিষয়ে তিনি বলেন, যদি কোনো বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় হয়, সেখানে আমলাদের সন্তানদের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা করতে তো বাধা নেই।
উদাহরণ দিয়ে ফরহাদ হোসেন বলেন, সরকারি কর্মচারীদের জন্য ঢাকায় একটি হাসপাতাল আছে। হাসপাতালটির নাম সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল হলেও এখানে সবাই চিকিৎসা নিতে পারেন। যদি কোনো বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় হয় সেটা একক কারও জন্য হবে না। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারণা হলো বিশ্বজনীন। নির্দিষ্ট কিছু মানুষের জন্য হলে সেটা বিশ্ববিদ্যালয় হয় না।
তিনি বলেন, সরকার আমলাদের প্রশিক্ষণ ও জ্ঞানার্জনে সব সময় গুরুত্ব দেয়। এ কারণে সাভারের লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে (পিএটিসি) এক হাজার জনের থাকার সুবিধাসম্বলিত ভবন তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এসব বিষয়ে খুবই উৎসাহ দেন। দেশের আর কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানে এত বড় পরিসরে প্রশিক্ষণের সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, শুধু সরকারি কর্মচারীদের জন্য আলাদাভাবে এ কনসেপ্টটা (আইডিয়া) আমরা নিতে পারছি না। যখন ইউনিভার্সিটি হবে, সেটি সবার জন্য ইউনিভার্সিটি হবে। সেখানে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তাকে পড়াশোনার সুযোগ নিতে হবে। আমরা বিষয়টাকে এভাবেই দেখি।