পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও এনবিআরের (শুল্ক ও আবগারি) কর্মকর্তা মতিউর রহমানের সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ জারি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এছাড়াও পুলিশের অতিরিক্ত পরিদর্শক ও বিআইডব্লিউটিএর সাবেক চেয়ারম্যান মো. শামছুদ্দোহা খন্দকার ও তাঁর স্ত্রী ফেরদৌসী সুলতানার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ভাবে ৬৬ কোটি ৪৮ লাখ ৬৯ হাজার ৯৮১ টাকার অর্জনের অভিযোগে দুদক আইন-২০০৪ এর ২৬(২),২৭(১) ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে ৪(২),(৩) ধারায় এবং দন্ডবিধি ১০৯ ধারায় মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (২ জুলাই ) দুপুরে দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও তাঁর স্ত্রী জীশান মীর্জা এবং তাদের দুই কন্যা ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাহসীন রাইসা বিনতে বেনজীরের বিরুদ্ধে দেশে ও বিদেশে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ভাবে স্থাবর -অস্থাবর সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদক আইন -২০০৪এর ২৬ (১) ধারায় সম্পদ বিবরণী দুদকে জমা দিতে নোটিশ জারি করেছে দুদক।
দুদক সচিব বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর কর্মকর্তা ড. মো. মতিউর রহমান, প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ, প্রথম পক্ষের দুই সন্তান আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্নব ও মেয়ে ফারজানা রহমান ইপ্সিতা এবং দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতারের বিরুদ্ধে দেশে ও বিদেশে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(১) ধারা ও দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা, ২০০৭ বিধি ১৭(১) মোতাবেক সম্পদ বিবরণীর নোটিশ জারি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত পরিদর্শক ও বিআইডব্লিউটিএর সাবেক চেয়ারম্যান মো. শামছুদ্দোহা খন্দকার ও তাঁর স্ত্রী ফেরদৌসী সুলতানার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ভাবে ৬৬ কোটি ৪৮ লাখ ৬৯ হাজার ৯৮১ টাকার অর্জনের অভিযোগে চার্জশিট দাখিল করেছে দুদক।
দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, শামছুদ্দোহা খন্দকার দুর্নীতির মাধ্যমে বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংকের হিসাবে সন্দেহজনক উৎসের অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও অস্বাভাবিক লেনদেনের মাধ্যমে ২১ কোটি ৫ লাখ ২৫ হাজার ১৮২৯ টাকা জমা করে পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় উত্তোলন করে তার অবস্থান প্রকৃতি, উৎস, মালিকানা আড়াল করার চেষ্টা করেছেন। দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে তিনি ৮ কোটি ৪৪ লাখ ১০ হাজার ২২১ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপনসহ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য দিয়েছেন। এছাড়া দুদকের অনুসন্ধানে ২ কোটি ৮৭ লাখ ৩ হাজার ৭৮ টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। যে কারণে তার বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৬(২) ২৭ (১) এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।
অন্যদিকে তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে ২৮ কোটি ৪৭ লাখ ৩ হাজার ৮৯১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করা এবং ২৭ কোটি ৪৮ লাখ ৮২ হাজার ৪৯১ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদক আইন -২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় ও দন্ডবিধি ১০৯ ধারায় চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দিয়েছে দুদক যা সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা -১ এর মামলার চার্জশিট নং -৭৪ ।