বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ঢলের ৭ বছর পূর্ণ হলো রোববার (২৫ আগস্ট)। ২০১৭ সালের এইদিনে মিয়ানমার থেকে প্রাণরক্ষায় বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গারা। এরপর তাদের টেকনাফ ও কক্সবাজারের বিভিন্ন শিবিরে তাদের আশ্রয় দেওয়া হয়। দীর্ঘ সাত বছরে সামান্য কিছু রোহিঙ্গা অন্যদেশ নিয়ে গেলেও বেশি সংখ্যক প্রত্যাবাসন হয়নি।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসনের হিসেব মতে, বর্তমানে কক্সবাজার ও ভাসানচর মিলিয়ে ১৩ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা আছে। এদের অর্ধেকেরই বেশি ২০১৭ সালে বাংলাদেশে এসেছে। এই দিনটিকে স্মরণে রোহিঙ্গা নেতারা কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে, বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছেন। এসব কর্মসূচিতে নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার দাবি জাচ্ছেন রোহিঙ্গারা।
এদিকে মাঝেমধ্যেই উত্তপ্ত হয়ে উঠে আশ্রয় শিবির, প্রায় সময় শোনা যায় অস্ত্রের ঝনঝনানি। রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা জড়িয়ে পড়ে অপহরণ, খুন, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, মাদক-কারবারসহ অপরাধকাণ্ড। তাই দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চান স্থানীয়রা।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত পাবলিক প্রসিকিউটর ফরিদুল আলম গণমাধ্যমকে বলেছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এপিবিএনের ৩টি ব্যাটালিয়ন কাজ করলেও থামছে না অপরাধ।
তিনি বলেন, এ বাংলাদেশে বিদ্যমান আইন ব্যবস্থায় এমন কোন অপরাধ নেই যেখানে রোহিঙ্গাদের সংশ্লিষ্টতা নেই।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর বাজেট কমে গেছে। এর ফলে রোহিঙ্গাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছি। ফলে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরাতে আন্তর্জাতিক মহলের সাথে আলোচনা করে কাজ করা হচ্ছে বলে জানালেন, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার।
সূত্র মতে, শরণার্থী হিসাবে বাংলাদেশে প্রথম রোহিঙ্গারা প্রবেশ করে ১৯৭৮ সালে। দ্বিতীয় দফা রোহিঙ্গারা আসে ১৯৯১-৯২ সালে। তৃতীয় দফা প্রবেশ করে ২০১৬ সালে। সর্বশেষ মোটাদাগে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে ২০১৭ সালের আগস্টের ২৫ তারিখ থেকে। সে সময় প্রায় দুই মাসে সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। আগের রোহিঙ্গা এবং নতুন করে আসা রোহিঙ্গা মিলে বাংলাদেশে রোহিঙ্গার সংখ্যা দাঁড়ায় ১১ লক্ষাধিক। বিগত ৬ বছরে নতুন করে জন্ম নিয়েছে প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ রোহিঙ্গা শিশু। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে বর্তমানে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ১৩ লক্ষাধিক, যার অর্ধেকের বেশি এসেছে ২০১৭ সালে।