ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ন্যায্য হলেও আইনের লঙ্ঘন ন্যায্য নয়—এমন কথা বলেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে শেখ মুজিবুর রহমান ও দেশের বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়ি হামলা-ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের প্রেক্ষাপটে এক বিবৃতিতে তারা এ কথা বলেছে।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) এইচআরডব্লিউর দেয়া বিবৃতিতে আগামী মার্চে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের (ইউএনএইচআরসি) অধিবেশনে একটি সর্বসম্মত প্রস্তাব উপস্থাপন করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। এইচআরডব্লিউ মনে করে, বাংলাদেশের ন্যায়বিচার দেখতে আগ্রহী জনগণের জাতিসংঘ-সমর্থিত প্রক্রিয়াকে (মেকানিজম) সমর্থন করা উচিত, যা সহিংসতা ও প্রতিশোধের বদলে একটি নিরাপদ গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ গড়তে সহায়তা করবে।
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পারিবারিক সম্পত্তিতে হামলার প্রসঙ্গে বিবৃতি বলা হয়, ‘একে তথাকথিত ‘বুলডোজার শোভাযাত্রা’ বলা হচ্ছে। ঘোষণা দিয়েই এই হামলা চালানো হয়েছে, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত সম্পত্তি রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে।’
এতে বলা হয়, ‘আওয়ামী লীগের সাবেক সরকারের বিরুদ্ধে যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখা যাচ্ছে, তা ন্যায্য হলেও আইনের লঙ্ঘন ন্যায্য নয়। বাংলাদেশের আবারও মারাত্মক দমন-পীড়নের দিকে ঝুঁকে পড়া উচিত নয়।’
‘গত বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ৩২ নম্বরে হামলা প্রসঙ্গে এইচআরডব্লিউর বিবৃতিতে বলা হয়, এমন সময়ে ভাঙচুর হলো, যখন হাসিনা তার সমর্থকদের উদ্দেশে অনলাইনে ভাষণ দিচ্ছিলেন এবং হাসিনার প্রত্যর্পণের জন্য ভারতের কাছে বাংলাদেশের দাবি জোরালো হচ্ছে। কিন্তু হাসিনাকে ফেরত দেয়ার আগে ভারত সরকারকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে প্রত্যর্পণের ঝুঁকি খতিয়ে দেখতে হবে।’
‘বর্তমান সরকারের সংস্কার উদ্যোগ প্রসঙ্গে বলা হয়, নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার বিচারব্যবস্থাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সংস্কারের কাজ শুরু করেছে। এই সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন ও দুর্নীতির জবাবদিহির বিষয়েও পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।’