মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলায় গাম্বিয়ার পাশের থাকার প্রতিশ্রুতি প্রধান উপদেষ্টার

২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের  সেই নৃশংসতাকে গণহত্যা আখ্যা দিয়ে ২০১৯ সালের ১১ই নভেম্বর আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলা দায়ের করে আফ্রিকার মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ গাম্বিয়া। গাম্বিয়ার করা গণহত্যার মামলার সফল পরিণতির জন্য আফ্রিকান দেশটির পাশের থাকার প্রতিশ্রুতি ও প্রচেষ্টার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বুধবার (১২ মার্চ) গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মামাদু তাঙ্গারা ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ করতে আসলে তিনি এ প্রতিশ্রুতি দেন।

গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধান উপদেষ্টাকে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে তার দেশের দায়ের করা গণহত্যা মামলা সম্পর্কে অবহিত করে বলেন, এই মামলাটি নিপীড়িত রোহিঙ্গা মুসলমানদের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে এবং চলমান রয়েছে।

তাঙ্গারা বলেন, আমি আপনাদের নিশ্চিত করতে পারি যে, গাম্বিয়ার রাষ্ট্রপতি এই বিষয়টি সমর্থন করছেন এবং বিষয়টি নজরে রাখছেন। আমরা এটিকে পুনরায় আলোচনায় আনতে চাই।

তিনি আরও বলেন, গাম্বিয়ার রাষ্ট্রপতি এবং গাম্বিয়ার জনগণের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। রোহিঙ্গা জনগণের স্বার্থে কাজ করার জন্য এবং মামলার সফল নিষ্পত্তির জন্য আফ্রিকান দেশটির অবিচল প্রতিশ্রুতি এবং অব্যাহত প্রচেষ্টার জন্য ড. ইউনূস গাম্বিয়াকে ধন্যবাদ জানান।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা এই মামলাটি সফল হতে চাই। আমরা আপনার সমর্থন চাই। এটি আমাদের জন্য একটি বড় সাহায্য।’

মামাদু তাঙ্গারা অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, ‘তার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা রোহিঙ্গা জনগণকে মর্যাদাপূর্ণ জীবন যাপনে সহায়তা করবে বলে জানান। আপনি গাম্বিয়ার একটি পরিচিত নাম। আপনার উজ্জ্বলতার কারণে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সর্বদা আপনার সঙ্গে থাকবে বলেও জানান তিনি।’

অধ্যাপক ইউনূস রোহিঙ্গা জনগণের জন্য সাহায্য সংগ্রহের জন্য ঢাকার প্রচেষ্টা এবং রাখাইনে মানবিক সহায়তা, বাস্তুচ্যুতদের খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদানের জন্য আহ্বান তুলে ধরেন।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে যৌথভাবে কাজ করার জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষরের জন্যও দুই নেতা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তারা আফ্রিকার লক্ষ লক্ষ মানুষকে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করতে এবং মহাদেশের কিছু সহিংসতা-পীড়িত অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় ক্ষুদ্র ঋণের সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা করেন।

রোহিঙ্গা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের জন্য প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান এবং বাংলাদেশ সরকারের এসডিজি বিষয়ক প্রধান সিনিয়র সচিব লামিয়া মোর্শেদ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।