স্মৃতিতে জুলাই অভ্যুত্থান

শহীদ মিনার থেকে এক দফা দাবি

স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পালাবদলের মুহূর্ত ২০২৪ সালের জুলাই। গত বছরের জুলাই-আগস্ট মাসের দিনগুলো ফিরে দেখতে বাংলা ট্রিবিউনের এই প্রয়াস।

২০২৪ সালের (৩ আগস্ট) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ঘোষণা করেন, সরকারের সঙ্গে আলোচনার কোনও পরিকল্পনা নেই। তিনি শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং গ্রহণযোগ্য ব্যক্তির নেতৃত্বে জাতীয় সরকার গঠনের দাবিতে ‘লংমার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। শেখ হাসিনার আলোচনার প্রস্তাব ছাত্ররা প্রত্যাখ্যান করে।

বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে নাহিদ ইসলাম শহীদ মিনারে সমবেত জনতার উদ্দেশে বক্তৃতা করেন। যেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রিসভার পদত্যাগের জন্য একক দাবি ঘোষণা করে এবং আহ্বান জানায়।

ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মিছিল করে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দেন।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের এক দফা

চট্টগ্রামে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর বাসায় হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় বাড়ির সামনে পার্কিং করা দুটি গাড়ি ভাঙচুর এবং একটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এর আগে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে লালখান বাজারে চট্টগ্রাম-১০ আসনের সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চুর কার্যালয়েও হামলা হয়। হামলার সময় অফিসে আগুন দেওয়া হয়। অপর একটি ঘটনায় গাজীপুরের শ্রীপুরে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে একজন নিহত হন।

রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও কোটা সংস্কার আন্দোলনের মূল সমন্বয়ক আবু সাঈদের মৃত্যুর ঘটনায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। দুপুর দেড়টার দিকে কুমিল্লার রেসকোর্সে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা ছাত্র আন্দোলনের আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায় এবং শিক্ষার্থীদের ওপর প্রকাশ্যে গুলি চালায়, এতে ১০ জন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয় এবং মোট ৩০ জন আহত হয়।

বগুড়ায় আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের দুই ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ ঘটে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট ও শটগান ব্যবহার করে। সাতমাথা, সার্কিট হাউস মোড়, রোমেনা আফাজ রোডসহ বেশ কয়েকটি এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষে ছয় শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ ও ৫০ জন আহত হন।