ভোলাগঞ্জ পাথর লুট: তদন্তে বেরিয়ে এলো ১৩৭ জনের নাম

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর পর্যটন এলাকায় পাথর লুটপাটের ঘটনায় গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জেলা প্রশাসকের কাছে দাখিল করেছে। প্রতিবেদনে লুটপাটে জড়িত ১৩৭ জনের তালিকা সংযুক্ত করা হয়েছে। 

বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কাছে সাত পৃষ্ঠার প্রতিবেদন দাখিল করে তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) পদ্মাসন সিংহ। কমিটির প্রধান জানান, প্রতিবেদনে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। সেটা জেলা প্রশাসক ব্যবস্থা নেবেন।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রতিবেদনে গণমাধ্যমসহ একাধিক মাধ্যম থেকে পাওয়া বিভিন্ন ব্যক্তির একটি তালিকা সংযুক্ত করা হয়েছে। তালিকায় ১৩৭ জনের নাম রয়েছে বলে ওই সূত্র জানিয়েছে। এদের অধিকাংশই রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী। প্রতিবেদনে কারা-কীভাবে পাথর লুট করে এবং পরিবেশ বিনষ্ট করে; সে বিষয়ে তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি ১০টি সুপারিশ করা হয়েছে। কমিটির প্রধান পদ্মাসন সিংহ জানিয়েছেন, প্রতিবেদনে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। সেটা জেলা প্রশাসক ব্যবস্থা নেবেন।

সম্প্রতি সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্র এলাকা থেকে পাথর লুটের ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। অভিযানে নামে যৌথবাহিনী। লুট হওয়া পাথর উদ্ধার অভিযান শুরু করে তারা। আলোচিত এ ঘটনার পর জেলা প্রশাসন তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে। এতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পদ্মাসন সিংহকে প্রধান কমিটি তিন সদস্যের কমিটিতে রাখা হয় কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও আজিজুন্নাহার ও সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আফজালুল ইসলাম লিংকনকে। ওই কমটির গত ১৭ আগস্টের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার কথা ছিল। পরে আরও তিন দিন সময় বাড়ানো হয়। তদন্ত শেষে আজ ‍প্রতিবেদন দাখিল করেন কমিটির সদস্যরা। 

এদিকে সাদাপাথর চুরির সঙ্গে জড়িত স্থানীয় ৪২ জনকে চিহ্নিত করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এদের মধ্যে স্থানীয় বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নেতারা রয়েছেন। কমিশনের এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান ও অনুসন্ধান চালিয়ে এদের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে বলে দুদক সূত্র জানিয়েছে।

সাদাপাথর চুরির ঘটনায় খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো, স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের কর্তব্যে অবহেলার তথ্যও পেয়েছে দুদক।

এদিকে বুধবার (২০ আগস্ট) বিকেলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার সম্মেলন কক্ষে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা উন নবী জানিয়েছেন, পাথর লুটের ঘটনায় প্রশাসনের কেউ জড়িত থাকার প্রমাণ মিললে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।