একাত্তর ইস্যুতে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের দাবির সঙ্গে বাংলাদেশ একমত নয় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
রোববার (২৪ আগস্ট) ঢাকা সফররত পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
সংবাদ সম্মেলনে ইসহাক দারের দাবির সঙ্গে বাংলাদেশ একমত কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘একমত হলে তো সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেতো। আমরা আমাদের অবস্থান বলেছি আর তারা তাদের অবস্থান বলেছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান পরিষ্কার। আমরা চাই হিসাবপত্র হোক টাকাপয়সার যে ব্যাপার আছে সেটির সমাধান হোক। গণহত্যার বিষয়ে তারা দুঃখ প্রকাশ করুক এবং মাফ চাক।'
তিনি বলেন, 'বৈঠকে স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কথা বলেছি। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান যে অমীমাংসিত ঐতিহাসিক বিষয়গুলো আছে সেগুলো নিয়েও আলোচনা হয়েছে। দুই দেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি নিয়ে কথা হয়েছে। আমাদের বাণিজ্য ভারসাম্য আমাদের বিপক্ষে সেটি আমরা উলেখ করেছি। দুই পক্ষই বাণিজ্য বৃদ্ধিতে আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন কারণ আমাদের মোট বাণিজ্যের পরিমাণ এক বিলিয়ন ডলারেরও কম।'
উপদেষ্টা বলেন, 'আমরা তাদের বাজারে কিছু প্রবেশাধিকার চেয়েছি। সাফটার অধীনে যেন সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে টেক্সটাইল, জ্বালানি, ঔষধ শিল্প, কৃষিপণ্য ও তথ্য প্রযুক্তি এই কয়েকটি খাতে বেশি সম্ভাবনাময় বলে মনে করেছি। এছাড়া কৃষি, মৎস ও প্রাণীসম্পদ সেক্টরেও সহযোগীতার সম্ভাবনা আছে। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জ্বালানি রপ্তানি বিষয়ে কথাবার্তা হয়েছে। পরিবহন ও যোগাযোগের ক্ষেত্রেও কথা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে জাহাজ চলাচল কীভাবে আরও নিয়মিত করা যায় সে বিষয়ে কথা হয়েছে। এ ছাড়াও শিক্ষা সংস্কৃতি, ক্রীড়া ক্ষেত্রে দুই দেশের সম্পর্ক কীভাবে আরও ভালো হয় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।'
বিগত সরকারের সময় পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ইচ্ছাকৃতভাবে পিছিয়ে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করে তৌহিদ হোসেন বলেন, 'পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক গত সরকারের আমলে ইচ্ছাকৃতভাবে পিছিয়ে রাখা হয়েছিল। আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি, আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে একটি স্বাভাবিক সম্পর্ক চাই এবং অন্যান্য বন্ধু দেশের সঙ্গে চাই; এর চেয়ে বেশি কিছু না।'