মালয়েশিয়ায় প্রবাসীদের সঙ্গে নির্বাচন ইস্যুতে বৈঠক করবে ইসি

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে নানা কার্যয়ক্রম হাতে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। 

তারই অংশ হিসাবে প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির সঙ্গে মতবিনিময় সভা করতে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকারের নেতৃত্বে দুই সদ্যসের একটি প্রতিনিধি দল মালয়েশিয়ায় যাচ্ছেন।

ইসি কর্মকর্তা জানান, মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের জন্য ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) প্রদানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা এ সফরের মূল উদ্দেশ্য হলেও, যেহেতু প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতে কমিশন অঙ্গীকারবদ্ধ সেহেতু সেখানকার প্রবাসীদের সঙ্গে ভোটার নিবন্ধনসহ বিদেশে থেকে দেশে কিভাবে ভোট প্রদান করবে তা নিয়ে আলোচনা করতে সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির সঙ্গে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে।

ইসির উপসচিব মো. শাহ্ আলম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত এক অফিস আদেশ থেকে জানা যায়, নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার এবং রাজবাড়ীর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর ) থেকে আগামী বুধবার  (১৭ সেপ্টেম্বর)  পর্যন্ত মালয়েশিয়া সফর করবেন। 

এ সময় মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের জন্য ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) প্রদানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ; প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে ভোটার নিবন্ধন বিষয়ক বৈঠক; মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক; মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির সঙ্গে  আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ভোটার নিবন্ধন এবং বিদেশে থেকে দেশে কিভাবে ভোট প্রদান করবে সে বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও উদ্বুদ্ধকরণ একটি মতবিনিময় সভা করবেন। 

এ সফরের সময় দাপ্তরিক কাজে নিয়োজিত হিসেবে গণ্য হবে এবং সকল ব্যয় বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের আইডিয়া প্রকল্প-২ বহন করবে।

জানা যায়, প্রবাসীসহ ভোটের সময় নিজ এলাকার বাইরে থাকা ভোটারদের জন্য ‘তথ্যপ্রযুক্তি-সহায়ক পোস্টাল ভোটিং’ চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বর্তমান পোস্টাল ব্যালট পদ্ধতি অকার্যকর হওয়ায় নতুনভাবে অনলাইনে আবেদন এবং নিবন্ধনের সুযোগ রাখার চিন্তা করা হচ্ছে। আগের মতোই ডাকযোগে ব্যালট পাঠিয়ে ভোট গ্রহণ হবে, শুধু আবেদন প্রক্রিয়াটি ডিজিটাল করা হচ্ছে। 

এই ব্যবস্থার জন্য আরপিও সংশোধন করে নিয়ম ঠিক করা হয়েছে। বাস্তবায়নে প্রায় ৪৯ কোটি টাকার ‘ওসিভি-এসডিআই’ প্রকল্প হাতে নিয়েছে ইসি। এতে প্রবাসীদের পোস্টাল ব্যালট মুদ্রণ, পরিবহনসহ প্রয়োজনীয় ব্যয় ধরা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ১০ লাখ প্রবাসী ভোটারকে লক্ষ্য করে এই কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

যেভাবে পোস্টাল ব্যালটে ভোটগ্রহণ করবে ইসি

ইসির রোডম্যাপে বলা হয়েছে, পোস্টাল ব্যালটে ভোটদান নিশ্চিতের জন্য অঋউ, গঙঋঅ, গঙঐঅ, গঙঊড, বাংলাদেশ ডাকবিভাগ, উওচ, ঝই, ইজঈ ইত্যাদি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। ৩০ সেপ্টেম্বর মধ্যে মোবাইল অ্যাপ তৈরি ও পরীক্ষামূলক (আউটকান্ট্রি ভোটিং- ওসিভি ও ইনকান্ট্রি ভোটিং- আইসিপিভি নিবন্ধন ও ট্রাকিং মডিউল) প্রতীক ও প্রার্থীদের সংযুক্ত করে চালাতে হবে। ১ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবরের  পর্যন্ত মোবাইল অ্যাপের ট্রায়াল, নীরিক্ষা, ত্রুটি সংশোধন ও ডেভেলপমেন্টের জন্য প্রস্তুত রাখতে হবে। এছাড়া চলতি মাস থেকে ওসিভি ও আইসিপিভি এর জন্য প্রচারণা, উদ্ভুতকরণ ও ভোটার শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করবে ইসি। যা চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত।

এতে আরও বলা হয়েছে, ১ অক্টোবর থেকে ১০ নভেম্বরে মধ্যে ব্যালট পেপার, নির্দেশিকা ও ঘোষণাপত্র মুদ্রণ করা হবে। ওসিভি ও আইসিপিভির জন্য নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হবে ১১ নভেম্বর, যা চলবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। ডাকবিভাগ খামের কাস্টমাইজেশন করবে। ভোটারদের কাছে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে ২০ নভেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। 

তফসিল ঘোষণা হওয়ার পর প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ শেষ হলেও ভোট দিতে পারবে ওসিভি ও আইসিপিভির আওতায় ভোটাররা। ভোট প্রদান ও ব্যালট পেপার দেশে ফেরত পাঠাতে হবে নির্বাচনের এক মাস আগে। এরপর কমিশন প্রতিটি ব্যালটে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার নাম লিখে তা সিল প্রেরণ করে দেবে।

রোজার আগে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোটের লক্ষ্যে কাজ করছে ইসি। তার আগে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা হতে পারে।