অ্যানথ্রাক্স নিয়ন্ত্রণে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সমন্বিত কার্যক্রম শুরু

দেশের বিভিন্ন জেলায় গবাদিপশুর মধ্যে অ্যানথ্রাক্স (তড়কা) রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় তা নিয়ন্ত্রণে জরুরি ও সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণ করেছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। বিশেষভাবে রংপুর ও গাইবান্ধা জেলাকে অ্যানথ্রাক্সে বেশি আক্রান্ত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করে সেখানে টিকাদান, সচেতনতামূলক সভা ও আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

রোববার (৫ অক্টোবর) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অ্যানথ্রাক্স একটি ব্যাকটেরিয়াজনিত জুনোটিক রোগ, যা গবাদিপশু থেকে মানুষের শরীরে সংক্রমিত হতে পারে। তাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহযোগিতায় টিকাদান, উঠান বৈঠক, লিফলেট বিতরণ, মাইকিং ও পথসভাসহ নানা সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

রংপুর জেলার পীরগাছা, কাউনিয়া, সদর, মিঠাপুকুর, গংগাচড়া, তারাগঞ্জ, বদরগঞ্জ ও পীরগঞ্জ উপজেলার মোট ১,৬৭,০০০ গবাদিপশুকে অ্যানথ্রাক্স টিকা প্রদান করা হয়েছে। টিকাদানের জন্য সেখানে ৩২টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। একইসঙ্গে ৩৬টি কসাইখানায় পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য গঠন করা হয়েছে ৩৬টি মেডিকেল টিম।

গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় এ পর্যন্ত ২৬,৪০০ গরুকে টিকা দেওয়া হয়েছে। আক্রান্ত এলাকায় গরু পুঁতে ফেলা, মাইকিং, উঠান বৈঠক, লিফলেট বিতরণ এবং ১৫ হাজার টাকা জরিমানাসহ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে ৫টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম।

সংগৃহীত ১১টি মাংসের নমুনার মধ্যে ১০টি নমুনায় অ্যানথ্রাক্স পজিটিভ পাওয়া গেছে। রক্তের ১১টি নমুনা পরীক্ষায় অবশ্য সবগুলো নেগেটিভ আসে। সংক্রমণের উৎস অনুসন্ধান ও পরিস্থিতি মূল্যায়নে গঠন করা হয়েছে একটি উচ্চ পর্যায়ের অনুসন্ধান টিম, যা মাঠ পরিদর্শন শেষে প্রতিবেদন জমা দেবে।

রংপুর বিভাগে প্রায় ৩০ লাখ অ্যানথ্রাক্স টিকা সরবরাহ করবে প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান (এলআরআই)। এর মধ্যে শুধু রংপুর ও গাইবান্ধা জেলাতেই পাঠানো হবে ২০ লাখ টিকা।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, স্থানীয় প্রশাসন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, জনপ্রতিনিধি ও জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অ্যানথ্রাক্স নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে। জনগণকে অসুস্থ পশু জবাই না করা, মৃত পশুকে পানিতে বা খোলা জায়গায় না ফেলে মাটিচাপা দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া যেকোনো পশুজনিত সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত স্থানীয় ভেটেরিনারি হাসপাতালে যোগাযোগের আহ্বান জানানো হয়েছে।