প্রশাসন ক্যাডার ও পুলিশের পর এবার সাড়ে ৪০০ কোটি টাকা চেয়েছে আনসার ও ভিডিপি। নির্বাচন ঘিরে সদস্যদের অস্ত্র, গোলাবারুদ ও ইউনিফর্ম কেনার জন্য এ অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব দিয়েছে সংস্থাটি।
ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নিরাপত্তা নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা। ইতোমধ্যে পুলিশের জন্য কেনা হচ্ছে প্রায় ৪০ হাজার ‘বডি ক্যামেরা’ আর ডিসি-ইউএনওদের জন্য কেনা হচ্ছে ২০০ কোটি টাকায় বিলাসবহুল গাড়ি। এই ধারাবাহিকতায় এবার নির্বাচন উপলক্ষে আনসার-ভিডিপি চেয়েছে সাড়ে ৪০০ কোটি টাকা। সংস্থাটির আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হয়ে এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ ফিরোজ আলী বলেন, ‘অত্যাবশ্যকীয় যেগুলো, সেগুলো প্রতিস্থাপন করা যেতে পারে। কিন্তু বিলাসিতার জন্য একটার বদলে দুইটা গাড়ি কেনা বর্তমান আর্থিক সংকটের প্রেক্ষাপটে বিবেচনা করা উচিত নয় ‘
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা দেখেছি, কীভাবে সরকারি অর্থ অপচয় হয়। এই সবই জনগণের ট্যাক্সের টাকা। এর ফলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাঁধে ঋণের বোঝা পড়বে। তাই সরকারি ব্যয় সাশ্রয়ী হওয়া উচিত, এটিই এখন অগ্রাধিকার হওয়া দরকার।’
যুক্তি হিসেবে আনসার বলছে, প্রায় ৪৫ হাজার ভোটকেন্দ্রের দায়িত্ব পালন করবে আনসার ও ভিডিপির ৬ লাখ সদস্য। এ কারণে অতিরিক্ত অস্ত্র-গোলাবারুদ, পোশাক ও নিরাপত্তা সামগ্রী কেনার প্রয়োজন পড়ছে। এতে ব্যয় হবে প্রায় সাড়ে ৪০০ কোটি টাকা।
তবে এত বড় অঙ্কের অর্থ অনুমোদনের আগে পর্যাপ্ত যাচাই-বাছাইয়ের পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। চলতি অর্থবছরের বাজেটে আনসারের অস্ত্র, গোলাবারুদ, পোশাক, নিরাপত্তা সামগ্রী, যানবাহন ও প্রশিক্ষণের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ২০৩ কোটি টাকা।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, গত দেড় দশকে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে। সেটি সংস্কারে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই লক্ষ্যে আইন, বিধি ও আদেশ সংস্কারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দপ্তর, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও কর্মকর্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগও চলছে। এর ফলে ব্যয়ও বাড়ছে আনুপাতিক হারে।