‘ভূতাপেক্ষিক ঘোষণাপত্র নয়, বিপ্লবী সরকারই সমাধান’

গণঅভ্যুত্থানের পাঁচ মাস পূর্তিতে জুলাই বিপ্লবের ভূতাপেক্ষিক ঘোষণাপত্র জারির উদ্যোগের তীব্র বিরোধিতা করেছে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) পরিষদের সহকারী সদস্য সচিব গালিব ইহসান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে দলটি বলেছে, ভূতাপেক্ষিক ঘোষণাপত্র দিয়ে দেশের রাজনৈতিক সঙ্কটের সমাধান হবে না বরং সংকট আরও ঘনীভূত হবে।

জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ মনে করে, বিদ্যমান সংবিধান পরিত্যক্ত হওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় বহাল থাকলে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে। এ অবস্থায় ছাত্র-তরুণদের ‘নৈরাজ্যবাদী-ভাববাদী’ অংশের ‘রাজনৈতিক অপরিণামদর্শিতা ও প্রতিবিপ্লবী প্রবণতাকে’ উৎসাহিত না করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূসকে বিপ্লবী সরকার গঠন করে জুন মাসের মধ্যে গণপরিষদ নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছে তারা।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা জুলাইয়ের ঘটনার পর থেকেই ‘সীমাহীন বিভ্রান্তি ও ভাববাদী প্রবণতায়’ আক্রান্ত ছিলেন। তাই ৩ ও ৫ আগস্ট বারবার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও তারা জাতীয় বিপ্লবের বিস্তারিত ইশতেহার ঘোষণা করেননি। বরং বিপ্লবের পর ‘বিপ্লবের শত্রুরা’ তাদের ব্যবহার করে বিপ্লবী সরকারের পরিবর্তে উপদেষ্টা সরকার গঠন করেছে। এতে ড. ইউনূসের নেতৃত্বের ‘লিগ্যাসি ও লেজিটিম্যাসি’ সীমিত হয়েছে এবং দেশ গড়ার যে জনআকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছিল তা ‘অঙ্কুরেই বিনষ্ট’ হয়েছে।

জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের অভিযোগ, ছয় মাস ধরে উপদেষ্টা সরকারের নামে ‘প্রতিবিপ্লবী তৎপরতা’ চলায় জুলাই বিপ্লব ‘সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে ধুয়ে মুছে গেছে’। সারা দেশে চাঁদাবাজি, লুটপাট, হানাহানি চলছে। এই অবস্থায় হয় নতুন করে গণআন্দোলন গড়ে তুলে বিপ্লবী সরকার গঠন করতে হবে অথবা বড় রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আত্মসমর্পণ করতে হবে। কিন্তু জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নতুন করে গণআন্দোলন না করেই আত্মসমর্পণ এড়ানোর ‘বৃথা চেষ্টা’ করছে।

জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ ভূতাপেক্ষিক ঘোষণাপত্র জারির তৎপরতা বাদ দিয়ে বিগত পাঁচ মাসের দায়ভার স্বীকার করে জনগণের কাছে বিপ্লবী রূপরেখা পেশ করে ‘গণমুখী রাজনীতি’ করার আহ্বান জানিয়েছে।