বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজাহারুল ইসলাম বলেছেন, রংপুরের গৌরব শহীদ আবু সাঈদসহ শত তরুণ শহীদদের রক্তের বিনিময়ে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। তাই সকল শহীদ এবং আহতদের কাছে জাতি ঋণী এবং কৃতজ্ঞ। তাই জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে শহীদেরা যে স্বপ্ন নিয়ে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করাটাই এখন আমাদের দায়ীত্ব ও কর্তব্য।
শুক্রবার (৪ জুলাই) সকালে তিনি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় বাবনপুর গ্রামে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ কথা বলেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অন্যতম সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও রংপুর দিনাজপুর অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক মাওলানা আব্দুল হালিম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও রংপুর জেলা আমির অধ্যাপক মুহাম্মদ গোলাম রব্বানী, দৈনিক সংগ্রামের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রথম রংপুর জেলা সংবাদদাতা প্রবীণ রুকন অধ্যাপক মাওলানা লুৎফর রহমান, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন রংপুর মহানগর সভাপতি এডভোকেট কাওছার আলী, জেলা জামায়াতের শুরা ও কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা নুরুল আমিন, পীরগঞ্জ উপজেলা আমির মাওলানা মিজানুর রহমান সহ স্থানীয় জামায়াত ও শিবির নেতৃবৃন্দ।
আজাহারুল ইসলাম যুদ্ধাপরাধ মামলায় দীর্ঘদিন করাগারে ছিলেন। সদ্য করামুক্ত এই নেতা আরও বলেন, আবু সাঈদরা নিঃস্বার্থভাবে গুলির সমানে দাঁড়িয়ে নির্ভয়ে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছে। তাদের এই অত্মদানের কারণে আমি আজ কারামুক্ত। ১৪ বছর মিথ্যে মামলায় ফাঁসির আসামি হিসেবে জুলুমের শিকার হয়ে কারাগার বন্দি ছিলাম। আজ মুক্ত হতে পেরেছি। আমার মত অনেকেই বন্দিশালা থেকে আজ মুক্তি পেয়েছে।
তবে অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের পরও এখনো দেশে অর্থবহ কোনো পরিবর্তন আসেনি বলে মত এটিএম আজহারের। তার ভাষায়, এ রক্ত দেওয়ার পরও এখনো দেশের তেমন পরিবর্তন হয়নি। এজন্য ভোটাধিকার এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সবাইকে দেশপ্রেম নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে চাই ঐক্যমত। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ও শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য কোন আপস নয়। এর জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে হবে।
তিনি বলেন, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার এখনই সময়। দেশের জন্য নিঃস্বার্থ ভাবে বুকের রক্ত বিলিয়ে দেয়া পৃথিবীর ইতিহাসে এক বিরল ঘটনা।
জামায়াতের এই নেতা স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার আমলের বিভিন্ন সময়ে জুলুমের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, জামায়াত ইসলামসহ ভিন্নমতের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের লাখ লাখ নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে, জেল-জুলুমের শিকার করেছে, হতে হয়েছে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার আমলে। আল্লাহ এই জুলুমের পরিণতিতে ২৪-এর বিপ্লবে ছাত্রজনতার গণ-অভ্যুত্থানে তাদের পতন ঘটিয়েছে এই জুলুমবাজ সরকারের।
তিনি এ সময় আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জ্ঞাপন করে বলেন, রংপুরের গৌরব আবু সাঈদ তার জীবন উৎসর্গ করেছে। এর বিনিময়ে জালিমের পতন ঘটেছে, জুলুমের অবসান হয়েছে।