সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের সবাই কিন্তু সৎ লোক নয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১২টা বাজিয়ে গেছে, এ (অন্তর্বর্তী) সরকার ২৪টা বাজিয়ে দিয়েছে।’
শনিবার (৯ আগস্ট) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস), ঢাকা দক্ষিণ মহানগর আয়োজিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘যে দল এখনও ফোটেনি, এখনও তারা রাজনৈতিক দলের অবয়ব নিতে পারেনি- তারা সব কিছু অ্যাডভেঞ্চার মনে করে। কিন্তু দেশ চালানো আর অ্যাডভেঞ্চার এক নয়।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ১৭/১৮ বছর ধরে যে শাসন-শোষণ ও গুম-খুন করেছে তাদের ইতিহাস ১৭০০ বছরেও ভুলতে পারবে না দেশের মানুষ।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘কিছু দল পিআর পদ্ধতির কথা বলে নির্বাচন হতে দেবে না বলছে, এটা তো এতো বছর বলেননি। এখন তাহলে এ ট্যাবলেট কে খাওয়ালো। নতুন প্রজন্ম ভোট দিতে জানেই না, এরমধ্যে নিয়ে আসছেন পিআর পদ্ধতি। এ পদ্ধতি দিয়ে দেশে অচলাবস্থা তৈরি করতে চান। জনগণ এটা মেনে নেবে না।’
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘ভারতে বসে দেশটির প্ররোচণায় ও পৃষ্ঠপোষকতায় ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে দেশের বিরুদ্ধে ও নির্বাচন বানচালে। আর আরও কিছু দল আছে যারা চায় না নির্বাচন হোক। কারণ তাদের মধ্যে একটা ধারণা জন্মেছে যে নির্বাচন হলে বিএনপি ক্ষমতায় যাবে। কিছু দল কোনো না কোনো ছুঁতো বের করে, এটা না হলে ওটা হতে পারবে না। এটা না সেটা হতে পারবে না। ১৭/১৮ বছর ধরে আন্দোলন করে এসব কথা শুনতে ভালোবাসে না জনগণ। তারা চায় নির্বাচিত সরকার।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি কখনও দেশ শাসন করে নাই, করবে না, বিএনপি দেশ পরিচালনা করেছে বা করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘উদ্দেশ্যমূলকভাবে আজকে বিএনপিকে জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে। কিছু হলেই দোষ দেয়া হচ্ছে বিএনপির। গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যার ঘটনায় এখন তো দেখা যাচ্ছে, যে দল ফোটেই নাই, সে দলের লোকজন জড়িত।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘গতবছরের জুলাই-আগস্টে যারা হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের বিচার করা দরকার, জরুরি ভিত্তিতে তবে বিচার ও নির্বাচন পাশাপাশি চলবে।’
তিনি বলেন, ‘আকাশ সংস্কৃতি এখনও ভারতের দখলে। আমাদের চ্যানেল না দেখালে তাদের চ্যানেলও আমাদের এখানে দেখানোর দরকার নেই। বিদেশে আমাদের বন্ধু থাকবে, কোনো প্রভু থাকবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিছুদিন আগে সিঙ্গাপুর গিয়েছিলাম সেখানে আন্দোলনে আহত ১২/১৩ জন সিঙ্গাপুর আছেন যাদের বেশিরভাগ চোখ হারিয়েছেন। তারা বললো, সরকার তাদের পাঠিয়েছে ঠিকই, কিন্তু পরবর্তীতে আর কোনো খোঁজখবর নেয়নি। তবে যারা বিএনপি করে সিঙ্গাপুরে আছেন, তারা সবসময় খোঁজ নেন। বিএনপিকে আল্লাহ ক্ষমতায় নিলে শহীদ ভাইদের যথাযথ মর্যাদা দেওয়া হবে। যারা আহত তাদেরও যথাযথ ব্যবস্থা করা হবে।’
জাসাস ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শওকত আজিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম, জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক এম এ মালেক, জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হেলাল উদ্দীন, গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মিরাজের বাবা আব্দুর রব মিয়া প্রমুখ। আলোচনা সভা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হয়। এতে জাসাসের শিল্পীরা অংশ নেন।