আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচন প্রস্তুতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, প্রবাসীদের ভোটাধিকার এবং নির্বাচনি আসনের সীমানা নির্ধারণসহ বিভিন্ন বিষয় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে তুলে ধরেছে ।
রোববার (১৭ আগস্ট) নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে প্রায় দেড়ঘণ্টার বৈঠক শেষে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি জানান, ইসি তাদের নির্বাচনি প্রস্তুতি যথাযথভাবে নিচ্ছে। তবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তাদের কিছু উদ্বেগ আছে। বিএনপিও মনে করে, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কিছুটা দুর্বল হয়েছে, কিন্তু নির্বাচন কয়েক মাস পরে হওয়ায় এই সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে তারা আশাবাদী। ইসি জানিয়েছে, প্রয়োজনে তারা নির্বাচনে অধিক সংখ্যক সেনা সদস্য এবং সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী মোতায়েনের অনুরোধ করবে। বিএনপিও রাজনৈতিক দল হিসেবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার ওপর জোর দিয়েছে।
প্রবাসীদের ভোট প্রসঙ্গে তিনি জানান, বিএনপির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যাদের এনআইডি এবং ই-পাসপোর্ট আছে, তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে। বিএনপি সাধারণ পাসপোর্টধারীদেরও ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির অনুরোধ জানিয়েছে। তবে এক্ষেত্রে ভুয়া পাসপোর্টধারীদের বিষয়ে যাচাই-বাছাই করার পরামর্শ দিয়েছে।
সীমানা পুনর্নিধারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইসি নির্বাচনি এলাকার ভৌগোলিক অখণ্ডতা, জেলা ও উপজেলার অখণ্ডতা এবং ভোটার সংখ্যাকে মূলনীতি হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে সীমানা নির্ধারণের কাজ করছে। আইন অনুযায়ী রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ জানানোর সুযোগ নেই। কেবল সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিরাই অভিযোগ জানাতে পারেন।
নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধি সংশোধনের বিষয়ে তিনি আরও জানান, ইসি তাদের প্রস্তাবিত আচরণবিধির খসড়া বিএনপির কাছে পাঠিয়েছিল, যার ওপর বিএনপি তাদের মতামত দিয়েছে। এখন ইসি সেই মতামত পর্যালোচনা করছে।
আরপিওতে ‘না ভোট’ বিধান প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম খান বলেন, এটি আমাদের দলের প্রস্তাব ছিল না। যদি ইসি এ বিষয়ে কোনো পরিবর্তন আনতে চায়, তবে তারা দলের ভেতরে আলোচনা করে মতামত দেবে।
জোটের মধ্যে আসন ভাগাভাগি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো তফসিল ঘোষণা না হওয়ায় এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। যারা যুগপৎ আন্দোলনে একসঙ্গে কাজ করেছেন, তারা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে একসঙ্গে কাজ করবেন।
ইসলামি দলসহ আগের যে জোট ছিল তাদের সঙ্গে নির্বাচনে জোটবদ্ধভাবে যাওয়ার কোনো আলোচনা হচ্ছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম খান বলেন, নির্বাচনের এখনো তফসিল ঘোষণা হয়নি। আসন নিয়ে আলোচনা হয়তো নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরে, এখন এটা নিয়ে আলোচনার কোনো সুযোগ নেই।
সিইসির সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী উপস্থিত ছিলেন।