রমজানের আগমনী বার্তা নিয়ে বিশ্ব মুসলিমের মাঝে হাজির হলো পবিত্র শাবান মাস। রমজানের আগাম প্রস্তুতির তাগিদ ও শবেবরাতের উপহার নিয়ে এলো বরকতময় এই মাস।
এ মাস বিশেষ মর্যাদা ও ফজিলতপূর্ণ। শাবান মাস একদিকে যেমন মুসলিম স্বাতন্ত্র ও ইসলামি ঐক্যের মাস অন্যদিকে তেমনি কাবাকেন্দ্রিক মুসলিম জাতীয়তা ও ভ্রাতৃত্ববোধে উজ্জীবিত হওয়ার মাস।
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, রজব আল্লাহর মাস, শাবান আমার মাস ও রমজান আমার উম্মতের মাস। শাবান মাসকে রমজান মাসের প্রস্তুতি ও সোপান মনে করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিশেষ দোয়া করতেন এবং অন্যদের তা শিক্ষা দিতেন।
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিজরি সালের শাবান মাসের গুরুত্ব, মাহাত্ম্য ও তাৎপর্যের বিবেচনায় এ মাসে অধিক হারে নফল ইবাদত-বন্দেগি করতেন। রমজানের মর্যাদা রক্ষা ও হক আদায়ের অনুশীলনের জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শাবান মাসে বেশি-বেশি রোজা রাখতেন।
হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত আছে যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রিয় মাসের একটি হলো শাবান। এ মাসে নফল রোজা আদায় করেই তিনি মাহে রমজানের রোজা পালন করতেন।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রজব ও শাবান মাসব্যাপী এ দোয়া বেশি বেশি পড়তেন- আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজবি ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগ না রমাদান। এর অর্থ হলো- হে আল্লাহ! রজব মাস ও শাবান মাস আমাদের জন্য বরকতময় করুন, রমজান আমাদের নসিব করুন।
শাবান মাসের বিশেষ আমলসমূহের মধ্যে অন্যতম হলো-বেশি বেশি নফল রোজা পালন করা। মাসজুড়ে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিয়মিত আমল প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা পালন করা। এছাড়া শুক্রবারসহ এ মাসেও আইয়ামে বিজের রোজা অর্থাৎ চান্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ নফল রোজা পালন করা।
বিশেষ করে তাহাজ্জুদ, ইশরাক, চাশত-দোহা, আওয়াবিন, তাহিয়াতুল মসজিদ, দুখুলুল মসজিদ ইত্যাদি নামাজের ব্যাপারে যত্নবান হওয়া খুবই জরুরি। আর সবসময় প্রিয় নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শেখানো দোয়াটি পড়া আমাদের জন্য একান্ত কর্তব্য।
শাবান মাসে ভারসাম্যপূর্ণ নেক আমলের তাগিদ দিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা তোমাদের সাধ্যানুযায়ী আমল করবে, কেননা, আল্লাহর কাছে প্রিয় আমল তা-ই যা সর্বদা পালন করা হয়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রায় গোটা শাবানে নফল রোজা পালন করতেন এবং অন্যদেরও বিশেষভাবে আমল করার উৎসাহ দিতেন।