নারীরা যেভাবে ইতেকাফ করবেন

রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি আমল। রমজানের বরকত ও ফজিলত বিশেষত হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ রজনী লাইলাতুল কদরের বরকত ও ফজিলত লাভের শ্রেষ্ঠতম উপায় হচ্ছে ইতিকাফ। 

ইতিকাফ শুধু পুরুষের জন্য নয়। নারীদের জন্যও ইতিকাফের বিধান রয়েছে। নবী (সা.) এর স্ত্রীরা ইতিকাফ করতেন। উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- নবী (সা.) মৃত্যু পর্যন্ত রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করেছেন। তার মৃত্যুর পর তার স্ত্রীগণ ইতিকাফ করেছেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২০৩৬; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১১৭২)

নারীদের ইতিকাফের বিধান: রমজানের শেষ দশকের ইতিকাফ পুরুষের জন্য সুন্নতে মুয়াক্কাদা আলাল কিফায়া। অর্থাৎ মহল্লার মসজিদে পুরুষদের মধ্যে একজনও যদি ইতিকাফ করে তাহলে পুরো মহল্লাবাসী দায়মুক্ত হয়ে যাবে। আর নারীদের জন্য ইতিকাফ করা মুস্তাহাব।

স্বামীর অনুমতি গ্রহণ: বিবাহিত নারী ইতিকাফ করতে চাইলে স্বামীর অনুমতি নিতে হবে। স্বামীর অনুমতি ছাড়া ইতিকাফ করা অনুচিত। আর স্বামীদের উচিত, যুক্তিসঙ্গত ও গ্রহণযোগ্য কারণ ছাড়া স্ত্রীদের ইতিকাফে বাধা না দেওয়া। তাদের ইতিকাফের সুযোগ করে দেওয়া। এতে উভয়ই সওয়াব পাবেন। (রদ্দুল মুহতার ২/৪৪১; ফাতাওয়া আলমগীরী ১/২১১)

নারীদের ইতিকাফের স্থান: নারীদের নামাজের স্থান তাদের ঘরের অন্দরমহল; মসজিদ নয়। তারা ঘরে নামাজ পড়েও পুরুষদের মসজিদে নামাজ আদায়ের সমপরিমাণ সওয়াবের অধিকারী হন বলে সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। যেন নারী বেশি সওয়াব হাসিল করার আশায় মসজিদে আসার জন্য উদগ্রীব না হয়। 

এ অর্থে নারীদের ঘর মসজিদের সদৃশ বলে পরিগণিত। তাই নারী ঘরে তাদের নামাজ আদায়ের জন্য নির্ধারিত স্থানে ইতিকাফ করবেন। যদি আগে থেকেই ঘরে নামাজের জন্য কোনো স্থান নির্ধারিত না থাকে তাহলে ইতিকাফের জন্য একটি স্থান নির্ধারিত করে নিবেন। এরপর সেখানে ইতিকাফ করবেন। 

(উমদাতুল ক্বারী ১১/১৪৮; মিরকাতুল মাফাতীহ ৪/১৪৪৬; হেদায়া ১/২৩০; মাবসূতে সারাখসী ৩/১১৯; বাদায়েউস সানায়ে ২/১১৩; ফাতাওয়া আলমগীরী ১/২১১; আওজাযুল মাসালিক ৫/৪৬১-৪৬৬; ফাতাওয়া দারুল উলূম যাকারিয়া ৪/৬৯৯)

ইতিকাফের স্থান পর্দায় আবৃত করা: নারীরা তাদের ইতিকাফের স্থান পর্দা দিয়ে ঢেকে নিবেন। যেন ঘরে কোনো বেগানা পুরুষ লোক আসলে তাদের স্থান পরিবর্তন করতে না হয়।