গর্ভবতীরা কি রোজা রাখতে পারবেন?

রমজান মাসে গর্ভাবস্থায় রোজা রাখা না রাখা নিয়ে অনেক মতভেদ রয়েছে। কেউ বলে গর্ভাবস্থায় রোজা রাখা যাবে, আবার কেউ বলে যাবে না। তবে এসব এসব প্রশ্নের উত্তর সরাসরি দেওয়া সম্ভব নয়। প্রকৃতপক্ষে রোজা রাখা যাবে কি না তা নির্ভর করে গর্ভবতীর স্বাস্থ্য ও গর্ভের সন্তানের স্বাস্থ্যের ওপর। 

রোজা রাখা নিয়ে গর্ভবতী নারীদের মনে অনেক প্রশ্ন থাকে। রোজা রাখা যাবে কি না, গর্ভের সন্তানের কোনো ক্ষতি হবে কি না, গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না-এমন হাজারো প্রশ্ন থাকে একজন গর্ভবতী নারীর মনে। এছাড়া ধর্মীয়ভাবেও গর্ভাবস্থায় রোজা রাখা না রাখা নিয়ে ভিন্ন মতভেদ রয়েছে।

তবে বিভিন্ন স্বাস্থ্য গবেষণায় দেখা গেছে, রোজা রাখলে তা গর্ভে থাকা বাচ্চার ওপর কোনো প্রভাব ফেলে না। তবে গর্ভবতী মা যদি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন ও ইনসুলিন নিয়ে থাকেন তাহলে রোজা তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ সারা দিন না খেয়ে থাকলে ব্লাড সুগার কমে যেতে পারে ও পানিশূন্যতার দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

রোজা রাখার আগে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা জরুরি

>> গর্ভবতী নারী শারীরিকভাবে সুস্থতার ওপর ভিত্তি করে রোজা রাখার সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

>> গরমের সময় যদি রোজা হয় সেক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কেননা গরমে পানাহার থেকে বিরত থাকলে গর্ভবতী মায়ের পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে।

>> গর্ভবতী নারীর যদি কোনো শারীরিক সমস্যা না থাকে সেক্ষেত্রে তিনি রোজা রাখতে পারবেন। এতে তার গর্ভের সন্তানের কোনো ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কেননা তিনি যতক্ষণ অনাহারে থাকবেন ততক্ষণ গর্ভের শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি তার শরীরে মজুত থাকে।

গর্ভাবস্থায় রোজা রাখার ক্ষেত্রে করণীয়

গর্ভাবস্থায় রোজা রাখলে অবশ্যই পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। এসময় চিন্তামুক্ত থাকাও জরুরি। রোজা রাখা অবস্থায় বেশি পরিশ্রমের কাজ বা হাঁটাহাঁটি করা যাবে না। ভারী কিছু বহন করবেন না। ইফতার, রাতের খাবার ও সেহরিতে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করতে হবে। এ সময় বেশি রাত জাগা স্বাস্থ্যর জন্য ক্ষতিকর। পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।

কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন

দীর্ঘ একমাস রোজা রাখলে অনেক সময় শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আগে নিজেকে জানতে হবে কী কী লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। যেমন- গর্ভের সন্তান নড়াচড়া না করলে, তলপেটে ব্যথা অনুভব হলে, পর্যাপ্ত বিশ্রাম করার পরও দুর্বলতা অনুভব হলে, বমি ও মাথাব্যথা হলে, জ্বরজ্বর ভাব হলে, গর্ভের শিশুর ওজন যদি না বাড়ে, ঘনঘন এবং গন্ধযুক্ত প্রস্রাব হলে।