শীতকাল কাজা রোজা আদায়ের উত্তম সময়

শীতকাল মুমিনের জন্য ইবাদতের বসন্তকাল। এ সময় দিন ছোট হওয়ায় রোজা রাখা সহজ এবং রাত বড় হওয়ায় তাহাজ্জুদের মতো নফল নামাজ আদায়ের সুবর্ণ সুযোগ থাকে।

হাদিসে শীতকালকে মুমিনের বসন্তকাল হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘শীতকাল মুমিনের বসন্তকাল।’ (মুসনাদে আহমাদ: ১১৬৫৬)।

আরেকটি হাদিসে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘শীতের রাত দীর্ঘ হওয়ায় মুমিনরা রাত্রিকালীন নফল নামাজ আদায় করতে পারেন এবং দিন ছোট হওয়ায় রোজা রাখতে পারেন।’ (শুআবুল ইমান: ৩৯৪০)

যারা গত রমজানের রোজা কোনো কারণে কাজা করেছেন, তাদের জন্য এটি কাজা রোজা আদায়ের উপযুক্ত সময়। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে এ মাসে (রমজানে) থাকবে, সে যেন তাতে রোজা রাখে। আর যে ব্যক্তি অসুস্থ বা মুসাফির, সে অন্য দিনে সংখ্যা পূরণ করে নেবে (কাজা আদায় করবে)। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজটাই চান, কঠিন করতে চান না।’ (সুরা বাকারা: ১৮৫)

নফল রোজা রাখার জন্য শীতকাল বিশেষভাবে উপযোগী। বছরের পাঁচ দিন রোজা রাখা হারাম (দুই ঈদের দিন এবং কোরবানির ঈদের পরের তিন দিন) এবং রমজানের রোজা ফরজ। বাকি দিনগুলোতে নফল রোজা রাখা যায়।

নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখতেন। আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, ‘সোমবার ও বৃহস্পতিবার আল্লাহর কাছে বান্দার আমল তুলে ধরা হয়। আর আমি পছন্দ করি, আমার আমল এমন সময় পেশ করা হোক, যখন আমি রোজাদার।’ (তিরমিজি: ৭৪৭)

এছাড়াও, প্রতি চান্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে ‘আইয়ামে বীজ’-এর রোজা রাখার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। এই দিনগুলোতে চাঁদের আলোয় পৃথিবী আলোকিত থাকে বলে এগুলোকে ‘আইয়ামে বীজ’ বলা হয়। আবু জর (রা.)-কে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তুমি যদি প্রতি মাসে তিনটি রোজা রাখতে চাও, তাহলে ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রাখো।’ (তিরমিজি: ৭৬১)

শীতকালের শীতল আবহাওয়া মুমিনদের জন্য ইবাদতকে আরও সহজ ও আনন্দদায়ক করে তোলে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মুমিনরা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারেন।