মহাকাশ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণে নাসার নতুন মিশন শুরু

মহাকাশ আবহাওয়া আরও নির্ভুলভাবে পর্যবেক্ষণ করতে নতুন মিশন শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। এ লক্ষ্যে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স তৈরি তিনটি মহাকাশযান বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে ফ্যালকন ৯ রকেটে করে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে।

উৎক্ষেপণের পর মহাকাশযানগুলো ল্যাগ্রেঞ্জ ১ (L1) পয়েন্টের পথে যাত্রা শুরু করেছে। পৃথিবী থেকে প্রায় ১.৫ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরের এ অবস্থান মহাকাশ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণের জন্য স্থিতিশীল ও কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে পরিচিত।

নাসার পাঠানো মহাকাশযানের মধ্যে অন্যতম হলো ইন্টারস্টেলার ম্যাপিং অ্যান্ড অ্যাক্সিলারেশন প্রোব (IMAP)। এটি সূর্যের উচ্চ শক্তির কণা এবং হেলিওস্ফিয়ার নামক চুম্বকীয় বলয় পর্যবেক্ষণ করবে, যা সৌরজগতকে মহাজাগতিক বিকিরণ থেকে সুরক্ষা দেয়।

সৌর ঝড় মহাকাশ আবহাওয়ার সবচেয়ে জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান। সূর্যের পৃষ্ঠে বিস্ফোরণ থেকে সৃষ্টি হওয়া এই ঝড়ে তীব্র বিকিরণ তৈরি হয়, যা পৃথিবীর বিদ্যুৎ গ্রিড, মোবাইল নেটওয়ার্ক, বিমান চলাচল এমনকি মহাকাশচারী ও কক্ষপথে থাকা উপগ্রহকেও হুমকির মুখে ফেলতে পারে।

ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (NOAA) এর পরিচালিত স্পেস ওয়েদার ফলো-অন (SWFO-L1) মহাকাশযান আগাম সতর্কতা দেওয়ার কাজে নিয়োজিত থাকবে। এ বিষয়ে সংস্থাটির কর্মকর্তা আইরিন পার্কার বলেন, এটি আসন্ন বিপদ ঠেকাতে পারবে না, তবে যথাসময়ে সতর্কবার্তা দিয়ে আমাদের প্রস্তুতির সুযোগ করে দেবে।

সতর্কবার্তা পাওয়া গেলে মহাকাশচারীদের আশ্রয় নেওয়া, পাইলটদের জিপিএস সিস্টেমে সম্ভাব্য বিঘ্নের সতর্কতা দেওয়া এবং বিদ্যুৎ গ্রিডে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হবে।

রকেটের তৃতীয় যাত্রী হলো ক্যারুথার্স জিওকোরোনা অবজারভেটরি। এটি পৃথিবীর এক্সোস্ফিয়ার পর্যবেক্ষণ করবে, যাতে মহাকাশ আবহাওয়ার প্রভাব পৃথিবীর উপর কেমনভাবে পড়ে তা আরও গভীরভাবে বোঝা যায়।

নতুন এই মিশনের মাধ্যমে মহাকাশ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণে বৈজ্ঞানিক গবেষণার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।