মানবসভ্যতার জন্য নাসার ভয়ংকর সতর্কবার্তা

মানবসভ্যতার জন্য ভয়ংকর এক সতর্কবার্তা দিয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। সংস্থাটির সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে, প্রায় ১০০ কোটি বছর পর পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে শ্বাস নেওয়ার মতো অক্সিজেন আর অবশিষ্ট থাকবে না। তখন প্রাণহীন এক মৃত গ্রহে পরিণত হবে পৃথিবী।

গবেষকরা জানিয়েছেন, গাছপালা বিলুপ্ত হওয়ার ফলে অক্সিজেন নিঃশেষ হবে, প্রাণীকুল ধ্বংস হবে এবং টিকে থাকবে শুধু কিছু অক্সিজেনবিহীন অণুজীব।

নাসার নেক্সাস ফর এক্সোপ্ল্যানেট সিস্টেম সায়েন্স এবং জাপানের তোহো ইউনিভার্সিটির গবেষকদের মতে, সূর্যের ক্রমবর্ধমান তাপই এই ভয়াবহ পরিবর্তনের মূল কারণ। গবেষণা বলছে, সূর্য যত উত্তপ্ত হচ্ছে, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাইঅক্সাইড ভেঙে যেতে থাকবে। অথচ সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে উদ্ভিদের অক্সিজেন উৎপাদনের জন্য এ গ্যাস অপরিহার্য। কার্বন ডাইঅক্সাইড হারালে গাছ থাকবে না, ফলে অক্সিজেন উৎপাদন বন্ধ হয়ে ধীরে ধীরে বিলীন হবে প্রাণ।

তোহো ইউনিভার্সিটির কাজুমি ওজাকি ও জর্জিয়া টেকের ক্রিস্টোফার রেইনহার্ডের যৌথ গবেষণা জানায়, অক্সিজেন হারানোর সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর ওজোনস্তরও ভেঙে পড়বে। এতে সূর্যের প্রাণঘাতী অতিবেগুনি রশ্মি সরাসরি পৃথিবীতে প্রবেশ করে জীববিকাশকে পুরোপুরি অসম্ভব করে তুলবে।

এছাড়া অক্সিজেন হারানোর পাশাপাশি বায়ুমণ্ডলে মিথেন গ্যাসের পরিমাণ বেড়ে যাবে। এই গ্রিনহাউস গ্যাস পৃথিবীর পরিবেশকে আরও বিষাক্ত করে তুলবে, যা মানুষের জন্য প্রাণঘাতী হবে।

যদিও এ ঘটনা ঘটতে প্রায় এক হাজার কোটি বছর সময় লাগবে, তবে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, এর প্রভাবের ইঙ্গিত হয়তো হাজার হাজার বছর আগেই দৃশ্যমান হতে শুরু করবে।

গবেষকদের মতে, এই তথ্যের সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো পৃথিবী চিরকাল বসবাসযোগ্য নয়। সূক্ষ্ম ভারসাম্যের ওপর টিকে আছে মানবজাতির অস্তিত্ব, যা ভঙ্গুর ও ক্ষণস্থায়ী। তাই আজ থেকেই প্রকৃতি রক্ষা, পরিবেশ সচেতনতা এবং দায়িত্বশীলতার বিকল্প নেই।