মধ্যরাতে আকাশ রাঙাবে লিওনিড উল্কাবৃষ্টি

জ্যোতির্বিজ্ঞানপ্রেমীদের জন্য আসছে এক মনোমুগ্ধকর মহাজাগতিক দৃশ্য বার্ষিক লিওনিড উল্কাবৃষ্টি (Leonids Meteor Shower)। প্রতি বছরের মতো এবারও নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে এটি সবচেয়ে স্পষ্ট দেখা যাবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ১৬ ও ১৭ নভেম্বর রাত হলো এই উল্কাপাত দেখার সবচেয়ে উপযুক্ত সময়।

লিও নক্ষত্রমণ্ডলের দিক থেকে ছুটে আসা এই উল্কাগুলো ৩ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত সক্রিয় থাকে। তবে মাঝামাঝি সময়ে এগুলো সবচেয়ে উজ্জ্বল ও স্পষ্ট দেখা যায়।

প্রতি ঘণ্টায় গড়ে তিনটি করে উল্কা দেখা গেলেও লিওনিডসের আকর্ষণ এর গতি ও আলো। গবেষকদের মতে, এই উল্কাগুলো পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে সেকেন্ডে প্রায় ৪৪ মাইল বেগে। মাঝে মাঝে আকাশে উজ্জ্বল আগুনের গোলার মতো ‘ফায়ারবল’ চোখে পড়ে। কখনো এসব উল্কা পৃথিবীর খুব কাছে ঘেঁষে এগিয়ে যায় যাকে বলা হয় আর্থ-গ্রেজার।

Meteor-shower

লিওনিডস সাধারণত টরিডস উল্কাবৃষ্টির পর দেখা যায়। টরিডসকে অনেকেই ‘হ্যালোইন ফায়ারবল’ নামে চেনেন। গবেষকদের মতে, এ ধরনের উল্কাপাত মহাকাশ থেকে সম্ভাব্য বিপদ যেমন আকাশে বিস্ফোরণ বা পৃথিবীর সঙ্গে সংঘর্ষ বোঝার ক্ষেত্রেও সহায়ক।

ইতিহাসে লিওনিডস উল্কাবৃষ্টি নিয়ে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ঘটনা আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত ১৯৬৬ সালের লিওনিডস স্টর্ম, যেখানে মাত্র ১৫ মিনিটে প্রতি মিনিটে হাজার হাজার উল্কা দেখা গিয়েছিল। সর্বশেষ এমন বড় উল্কাবৃষ্টি হয়েছিল ২০০২ সালে। সাধারণত ৩৩ বছর অন্তর বড় ঝড় দেখা যায়, তাই এ বছর বড় ধরনের ঝড় না হলেও দর্শনীয় উল্কাবৃষ্টি দেখা যাবে।

Meteor shower2

উল্কাবৃষ্টি দেখার সেরা সময় ও প্রস্তুতি

উল্কাবৃষ্টি দেখার সর্বোত্তম সময় রাত ১২টার পর। নাসার পরামর্শ অনুযায়ী-

  • শহরের আলো থেকে দূরে কোনো অন্ধকার জায়গা বেছে নিতে হবে।
  • ঠান্ডা থেকে বাঁচতে গরম কাপড়, চাদর বা চেয়ার রাখা উচিত।
  • পূর্বদিকে পা করে শুয়ে আকাশের দিকে তাকালে উল্কা দেখার সম্ভাবনা বাড়ে।
  • অন্তত ৩০ মিনিট অন্ধকারে থাকলে চোখ রাতের আলোতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে।

ধৈর্য ধরে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকলে রাতভর যে কোনো সময় জ্বলে উঠতে পারে উজ্জ্বল লিওনিড উল্কা রাতের আকাশকে করে তুলবে আরও জাদুকরি।