দেশে চলতি অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে (জুলাই’২৩-এপ্রিল’২৪) পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছে ৭১ কোটি ৬৪ লাখ ডলার। যা গত অর্থবছরে একইসময়ে আয় এসেছিল ৭৭ কোটি ৮ লাখ ডলার। ফলে গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে খাতটি থেকে রপ্তানি আয় কমেছে ৫ কোটি ৪৪ লাখ ডলার বা ৭ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো(ইপিবি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) দশ মাসে ৭১ কোটি ৬৪ লাখ ৪০ হাজার ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। অপরদিকে এ সময়ে সরকারের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৩ কোটি ৮৫ লাখ ৭০ হাজার ডলার। এতে করে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় কমেছে ১২ কোটি ২১ লাখ ৩০ হাজার ডলার বা ১৪.৫৬ শতাংশ।
পাট খাতের সংশ্লিষ্ট অন্যতম বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান আকিজ গ্রুপ সূত্রে জানা গেছে, পাট পণ্যের বৃহৎ বাজার ছিল তুরষ্ক। বাজারটিতে দুই লাখ টনের চাহিদা এক লাখ টনে নেমে এসেছে। আর দ্বিতীয় বৃহৎ বাজারটি ছিল চীন। অন্যদিকে ভারতের বাজার বড় হলেও বাড়তি শুল্ক আরোপে সেটি অনুকুলে নেই। এ অবস্থায় পাট ও পাটজাতপণ্যের বাজার যেকোন মূল্যে টিকিয়ে রেখে রপ্তানি আয় বাড়াতে হবে। যাতে আমরা পাট ও পাটজাত পণ্য বিদেশে রপ্তানি করে দেশকে সমৃদ্ধ করতে পারি।
ইপিবির রপ্তানির আয়ের তথ্য আরো দেখা গেছে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের (জুলাই-এপ্রিল) সময়টিতে কাঁচা পাট রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ১২ কোটি ৭০ লাখ ডলার। যা আগের অর্থবছরের একইসময়ে রপ্তানি আয় এসেছিল ১৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এতে করে কাঁচা পাটের রপ্তানি আয় কমেছে ২৪.৮৭ শতাংশ।
আরেক পণ্য পাটের সুতা থেকে চলতি অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছে ৪১ কোটি ৬৯ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের একইসময়ে রপ্তানি হয়েছিল ৪২ কোটি ৩ লাখ ডলার। এতে করে পণ্যটির রপ্তানি কমেছে ০.৮০ শতাংশ। আর সরকারের লক্ষমাত্রা থেকে এ পণ্যটির রপ্তানি কমেছে ৫.২০ শতাংশ। অর্থাৎ সরকারের লক্ষমাত্রা ছিল ৪৩ কোটি ৯৮ লাখ মার্কিন ডলার।
পাটের ব্যাগ ও বস্তা রপ্তানির পরিমাণ আগের অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে কমেছে ১০.৭৩ শতাংশ। পণ্যটির চলতি অর্থবছরে রপ্তানি আয় হয়েছে ৮ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। যা আগের অর্থবছরের একইসময়ে রপ্তানি হয়েছিল ১০ কোটি ৩ লাখ মার্কিন ডলার। অন্যদিকে সরকারের লক্ষমাত্রা ছিল ১০ কোটি ৬৮ লাখ ডলার। এতে সরকারের লক্ষমাত্রা থেকে আয় কমেছে ১৬.১৭ শতাংশ।
এছাড়া পাট ও পাটজাতের অন্যান্য পণ্য রপ্তানির পরিমাণ আগের অর্থবছরের তুলনায় ২.২৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ২৮ লাখ ডলারে।
পাট অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জিডিপিতে এ খাতের অবদান ২.৮ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৭ লাখ ২১ হাজার হেক্টও জমিতে পাট চাষ হয়। এতে দেশে বছরে ৮৫ থেকে ৯০ লাখ বেল কাঁচা পাট উৎপাদিত হয়। আর ২০২১-২২ অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ১১২ কোটি ৭৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার আয় করেছে। আর সমাপ্ত অর্থবছরের (২০২২-২৩) জুন শেষে পাট ও পাটজাত পণ্য থেকে বাংলাদেশ ৯১ কোটি ২২ লাখ ডলার আয় করেছে।