নদীর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলনের ফলে হুমকীতে পড়ছে পরিবেশ। এই বালু উত্তোলনে নদীতটে অবস্থানগত বিভিন্ন স্থাপনা ধংস হচ্ছে। এসব দিক লক্ষ্য রেখে স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখতে বালু উত্তোলনকে অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্টে। একই সঙ্গে দেশের সর্বোচ্চ আদালত বালু উত্তোলনের টেন্ডার প্রথার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
কিন্তু আদালতের সেই আদেশ অমান্য করে একশ্রেণির মানুষ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত রাখে। এই কাজের কাজী ফ্যাসিবাদীদের দোসর, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চরকেওয়া ইউপি চেয়ারম্যান হাজি আবছার উদ্দিন। গেল সন তিনি টেন্ডার নিয়ে সরকারি বিধি নিষেধ থোড়ায় কেয়ার করেন। ক্ষমতার দাপটে তিনি নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তেলন করেন। এবারেও তিনি নিজেকে হাইড করে নতুন করে বালুমহল ইজারা নেবার পায়তারা চালাচ্ছেন।
এদিকে এই বালু মহল ইজারা দিলে এলাকা বিশাল ক্ষতির মুখে পড়বে বলে সচেতন মহলের আশঙ্কা। বিশেষ করে কৃষিতে ভয়াবহ ধস নামবে। বিশেষজ্ঞরা জানান, বালুমহল ইজারা নেওয়া হয় মুন্সীগঞ্জ জেলা থেকে। কিন্তু বালু উত্তোলন করা হয় পুরোপুরি চাঁদপুর তথা উত্তর মতলব এলাকা থেকে। তাদের এই অবৈধবালু উত্তোলনের ফলে ঝুঁকিতে পড়েছে এলাকার অর্থনীতি। স্থাপনা কৃষিজমি, এমনকি সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সমূহ এখন সেই ঝুঁকির ভিতরে পড়েছে।
এছাড়াও হাজার হাজার একর কৃষিজমি অবৈধ বালু উত্তোলনের শিকার হয়ে ধ্বংস হচ্ছে। দেশের বৃহত্তম আলু উৎপাদিত হয় এই এলাকায়। সেই সঙ্গে ধান শরিষাসহ নানা ধরনের কৃষিজাত পণ্যের আবাদ হয় এখানে। এখানকার আবাদ দিয়ে দেশের বৃৃহত্তর চাহিদা মেটানো হয়। কিন্তু অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে কৃষির সম্ভাবনা এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। গত বছর মহামান্য হাইকোর্ট এই বালুমহল টেন্ডারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
গতবারের ফ্যাসিবাদের দোসর চেয়ারম্যান হাজি আফছার উদ্দিন এবারেও পায়তারা চালিয়ে বালু মহলের টেন্ডার বাগিয়ে নিতে নানা ধরনের ছক আটছেন। যদিও তিনি সামনে নেই কিন্তু ভুতের মতো ঠিকই তিনি পিছন থেকে কলকাঠি নাড়ছেন। লক্ষ্য এবারে ইজারা নিয়ে তিনি তার ধ্বংসের অসমাপ্ত কাজটি সমাপ্ত করা! কিন্তু স্থানীয় সচেতন মহল বিষয়টি বুঝতে পেরে আইনের পথে হাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাই তারা আদালতে বালু মহল ইজারা দেবার বিপরীতে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এদিকে মতলবের জন্য এই টেন্ডার দুর্ভাগ্য বয়ে আনে। কারণ, মুন্সীগঞ্জের নামে টেন্ডার হলেও তার পুরো কার্যক্রম চালানো হয় চাঁদপুর জেলার উত্তর মতলব এলাকা। মুন্সীগঞ্জ জেলার সীমানা বাদ দিয়ে তষ্করের দল উত্তর মতলবকে বেছে নেয়। তারা এই এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করে থাকে। মেঘনা নদীর কারণে সহজেই এই দুবৃর্ত্তরা অনায়াসে উত্তর মতলব এলাকায় প্রবেশের সুযোগ পায়। পক্ষান্তরে মুন্সীগঞ্জ জেলা থেকে কোন বালু উত্তোলন করা হয় না। উল্টো তথাকথিত এই টেন্ডারের সুযোগ নিয়ে এরা চাঁদপুরে অবাধে তাদের অবৈধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে গেছেন। তাদের অবৈধ কর্মকাণ্ডে চাঁদপুরের একটি বড় অংশ এখন ধ্বংসের মুখে। তাদের এই অপকর্ম থেকে বাঁচতে এলাকাবাসী সংঘবদ্ধ হয়েছেন।