অবিশ্বাস্য নাটকীয়তা আর শেষ মুহূর্তের উত্তেজনায় ভরা এক দিনের পর অবশেষে বাংলাদেশ নারী দলের পেয়ে গেল ওয়ানডে বিশ্বকাপের টিকিট। নিজেদের শেষ দুই ম্যাচে হারলেও থাইল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের রোমাঞ্চকর সমাপ্তি এনে দিল নিগার সুলতানা জ্যোতিদের কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন।
এ বছর ভারতে অনুষ্ঠেয় ওয়ানডে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত হয়ে গেল টাইগ্রেসদের।
ক্রিকেট কখনো কখনো যে সিনেমার চেয়েও নাটকীয় হতে পারে, আজ সেটাই প্রমাণ করলো থাইল্যান্ড বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ। ১০ ওভারে দরকার ১৬৭ রান কিংবা ১১ ওভারে করতে হবে ১৭২-এই অসম্ভব সমীকরণ নিয়ে মাঠে নামে ক্যারিবীয়রা। এমন অসম্ভব লক্ষ্য তাড়া করে ম্যাচ জেতার মতো দুর্দান্ত চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা হলো না।
শেষ দুই বলে প্রয়োজন ছিল-প্রথমে চার, আর পরের বলে ছয়। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে প্রথম বলেই ওড়ানো ছয়ে ম্যাচ জিতলেও নেট রান রেটের হিসাবে পিছিয়ে থেকে বাদ পড়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বিশ্বকাপে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ।
বাছাইপর্বে বাংলাদেশ দল শুরু করেছিল স্বপ্নের মতো। টানা তিন জয়ে বিশ্বকাপের মূলপর্ব প্রায় নিশ্চিতই ছিল। কিন্তু শেষ দুই ম্যাচে হেরে শঙ্কার মুখে পড়ে নিগার বাহিনী। পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে হেরে গেলে সমীকরণ দাঁড়ায়-ওয়েস্ট ইন্ডিজ যেন রান রেটে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে যেতে না পারে।
বাংলাদেশের রান রেট তখন ছিল +০.৬৩৯, আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের –০.২৮৩। তাই তাদের দরকার ছিল থাইল্যান্ডের দেওয়া ১৬৭ রানের লক্ষ্য মাত্র ১০ ওভারে টপকে যাওয়া। কিন্তু তারা সেই অসম্ভব চ্যালেঞ্জে পিছিয়ে পড়ে। ১১তম ওভারে শেষ বলেই ছয় মেরে জয় পেলেও সময় নষ্ট হয়ে গেছে। আর এক বল আগেই চার হলে বিশ্বকাপ যাত্রা হতে পারতো তাদের। সেই এক বলের নাটকীয়তায় ভর করে বাংলাদেশ পায় বিশ্বকাপের টিকিট।
ব্যাট হাতে থাইল্যান্ডও দেখিয়েছে সাহসিকতা। শুরুতে ব্যাটিং বিপর্যয়ের পর নাথাকান ছানথামের ৬৬ রানের ইনিংসে ভর করে ১৬৬ রান তুলেছিল তারা। যদিও শেষ পর্যন্ত অলআউট হয়ে যায় ৪৬.১ ওভারে, তবু সেই সংগ্রহটাই নাটকীয়ভাবে বাংলাদেশকে এনে দেয় হাসি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতলেও পয়েন্ট তালিকায় বাংলাদেশের সঙ্গে সমতায় এসেই রান রেটের ব্যবধানে বিদায় নেয় তারা।
বাংলাদেশের চূড়ান্ত রান রেট +০.৬৪। ওয়েস্ট ইন্ডিজের চূড়ান্ত রান রেট +০.৬৩! এই সামান্য ব্যবধানেই ইতিহাস গড়ে দেয় বাংলাদেশ নারী দল। পা রাখে বিশ্বকাপে!