বিতর্কিত ১৫ ক্লাব নিয়ে জলঘোলা কম হয়নি। পক্ষে- বিপক্ষে মন্তব্য কম আসেনি। তবে অবশেষে অনেক নাটকীয়তার পর কাউন্সিলরশিপ ফিরে পেয়েছে ক্লাবগুলো। বিসিবি নির্বাচনে ভোট দেবে তারাও।
বিগত আওয়ামী লিগ সরকারের সময়ে অন্যায় সুবিধা নিয়ে ১৮টি ক্লাব তৃতীয় বিভাগ বাছাইয়ের বৈতরণী পার হয়েছিল লিগ না খেলেই। যেখাবে কাউন্সিলর হওয়ার মতো ক্লাব ছিল ১৫টি।
এসব ক্লাবকে নিয় এসে বিসিবিতে নিজেদের ভোটব্যাংক বাড়াতেই মূলত এমন অপকৌশলের আশ্রয় নিয়েছিল সেই সময়ের বোর্ড। তবে ক্ষমতার পালাবদলের পর চাপে পড়ে যায় ক্লাবগুলো, নজর পড়ে দুদকের।
দুদকের তদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতা মেলায় বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্য অনুসন্ধানের সুপারিশ করে তারা। এ কারণে ২৩ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত বিসিবি নির্বাচনের খসড়া ভোটার তালিকায় ছিল না ক্লাবগুলো।
তবে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ ছিল ক্লাবগুলোর। সেসব আপিল গ্রহণ ও নিষ্পত্তি করে আজ প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় বিতর্কিত ১৫টি ক্লাবকেই রেখেছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশন প্রধান মোহাম্মদ হোসাইনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি শুক্রবার ভার্চুয়াল সভার মাধ্যমে চূড়ান্ত তালিকা অনুমোদন করে। পরে বিসিবি ৪টা ৪০ মিনিটে তালিকাটি অফিসের নোটিশ বোর্ডে পোস্ট করে।
যার ফলে আপাতত বিসিবি নির্বাচনে ভোট দিতে বাধা থাকছে না এক্সিউম ক্রিকেটার্স, ঢাকা ক্রিকেট একাডেমী, মোহাম্মদ ক্রিকেট ক্লাব, নবাবগঞ্জ ক্রিকেট কোচিং একাডেমী, পূর্বাচল স্পোর্টিং ক্লাব, গুলশান ক্রিকেট ক্লাব, ওল্ড ঢাকা ক্রিকেটার্স, ভাইকিংস ক্রিকেট একাডেমী, বনানী ক্রিকেট ক্লাব, নাখালপাড়া ক্রিকেটার্স, মহাখালী ক্রিকেট একাডেমী, ধানমন্ডি ক্রিকেট ক্লাব, প্যাসিফিক ক্রিকেট ক্লাব, স্যাফায়ার স্পোর্টিং ক্লাব ও আলফা স্পোর্টিং ক্লাবের কাউন্সিলরদের।
তাদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখ্যযোগ্য ভাইকিংস ক্রিকেট একাডেমী। ক্লাবটির কাউন্সিলর হিসেবে বিসিবি নির্বাচনে অংশ নেয়ার কথা ছিল ইফতেখার রহমান মিঠুর। খসড়া তালিকায় না থাকলেও চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় আছেন তিনি।
কাউন্সিলরশিপ দেয়া হয়েছে খসড়া তালিকায় ফাঁকা থাকা ৫ জেলা ক্রীড়া সংস্থাকেও। নওগাঁ থেকে কাউন্সিলর হয়েছেন মোহাম্মদ রুবায়েদ হক। বগুড়া থেকে রাকিবুল ইসলাম, পাবনায় তারিক খান, সিরাজগঞ্জে আব্দুল্লাহ আল মামুন ও সিলেট জেলা থেকে কাউন্সিলর হয়েছেন সৈয়দ ফজলে এলাহী।
সবমিলিয়ে ১৯২টি কাউন্সিলর পদের মাঝে ১৯১ জন কাউন্সিলরের তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন
তবে নরসিংদী জেলা থেকে কাউকে কাউন্সিলরশিপ দেয়া হয়নি।
মূলত, বিতর্কিত এই ক্লাবগুলোকে কাউন্সিলরশিপ ফিরিয়ে দিতে বেশ আগ্রহী ছিলেন তামিম ইকবাল। ওল্ড ডিওএইচএস ক্লাবের কাউন্সিলর হিসেবে বিসিবির পরিচালক পদে নির্বাচন করা তামিম আছেন বিতর্কিত গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের সহ সভাপতির দায়িত্বেও।
গুলশানের প্রতিনিধি হিসেবে ২৫ সেপ্টেম্বর বিসিবিতে এসেছিলেন তিনি। যেখানে তিনি অবৈধ পন্থায় কাউন্সিলর হওয়া ১৫টি ক্লাবের হয়েই কথা বলেছেন। যেখানে তিনি ক্রিকেটারদের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করতে বলেন।
কাউন্সিলরশিপ না দিলে ৩০০ জন ক্রিকেটার ও তাদের পরিবারের জীবন কঠিন হয়ে উঠতে পারে। কারণ ক্লাব স্পন্সর না পেলে তাদের বেশিরভাগই খেলার সুযোগ পাবেন না। তামিমের এমন মন্তব্যের একদিন পরই ১৫ ক্লাবের কাউন্সিলরশিপ ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।