বাফুফের চিঠির জবাবে বিসিবির দুঃখপ্রকাশ

ক্রিকেট কনফারেন্সে ফুটবল ও ফুটবলারদের নিয়ে বিসিবি পরিচালক আসিফ আকবরের মন্তব্যে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় আলোচনার জন্ম হয়েছে। গত ৯ নভেম্বর অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ক্রিকেট কনফারেন্সে তিনি মাঠ ব্যবহার ও মাঠসংকট নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, পরিস্থিতি দ্রুত সমাধান না হলে ‘মারপিট’ পর্যন্ত হতে পারে। তাঁর এই মন্তব্যকে ফুটবলের জন্য অসম্মানজনক ও প্ররোচনামূলক হিসেবে বিবেচনা করে বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল বিসিবি সভাপতির কাছে আনুষ্ঠানিক ব্যাখা চান।

চার দিনের পর বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বাফুফেকে চিঠি পাঠিয়ে স্পষ্ট করেন, আসিফ আকবরের মন্তব্য সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত অবস্থান, যা ক্রিকেট বোর্ডের নীতি বা বক্তব্য নয়। এমনকি তিনি অনুষ্ঠানে বিসিবির পরিচালক নয়, বরং জেলা প্রতিনিধিত্বকারী কাউন্সিলর হিসেবে পরিচয় পেয়েছিলেন। চিঠিতে বলা হয়, মাঠ ব্যবহারের জটিলতা নিয়ে দীর্ঘদিনের হতাশা থেকেই আসিফ এমন ভাষা ব্যবহার করেছেন, যা থেকে অনাকাঙ্ক্ষিত বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। 

বিসিবি সভাপতি একইসঙ্গে দুঃখ প্রকাশ করে জানান, তাঁর কোনো কর্মকর্তার বক্তব্যের কারণে যদি ফুটবল পরিবার আঘাত পেয়ে থাকে, তবে সেটি অনভিপ্রেত এবং ক্রিকেট বোর্ড আন্তরিকভাবে দুঃখিত।

এর বিপরীতে ফুটবল অঙ্গনের ক্ষোভ এখনো প্রশমিত হয়নি, কারণ আসিফ আকবর ব্যক্তিগতভাবে ক্ষমা চাননি। ফুটবলাররা তার বক্তব্য প্রত্যাহার এবং ক্ষমা চাওয়ার দাবি তুললেও তিনি সেই পথে হাঁটেননি। ফলে আজ সোনালী অতীত ক্লাবে এ বিষয়ে একটি জরুরি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে।

তবে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা আসিফ আকবর নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গত রাতে ফেসবুক লাইভে হাজির হন। সেখানে তিনি স্বীকার করেন যে তার মন্তব্য ফুটবলভক্তদের আঘাত করেছে এবং তিনি ইচ্ছাকৃতভাবেই তা করেছেন-যদিও উদ্দেশ্য ছিল শত্রুতা নয়, বরং দেশের দুই জনপ্রিয় খেলায় দীর্ঘদিন ধরে বিরাজমান মাঠসংক্রান্ত দ্বন্দ্বকে আলোচনায় আনা।

তার দাবি, ক্রিকেট ও ফুটবল একই অবকাঠামোর ওপর নির্ভর করায় সমন্বয়ের অভাব থেকেই সমস্যাটি জটিল হয়েছে, এবং সেটি প্রকাশ্য আলোচনা ছাড়া সমাধান পাওয়া সম্ভব নয়। তাই তিনি কঠোর ভাষা ব্যবহার করলেও এখন তা নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেন।