বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটে দীর্ঘদিন ধরে সবচেয়ে সফল বোলারের আসনে ছিলেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু মিরপুর টেস্টে আরেক স্পিনারের উত্থান সেই অবস্থানকে ভাগ করে নিয়েছে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে চার উইকেট নিয়ে তাইজুল ইসলাম স্পর্শ করেছেন সাকিবের ২৪৬ উইকেটের রেকর্ড, ছুঁয়ে ফেলেছেন দেশের টেস্ট ইতিহাসের সর্বোচ্চ উইকেটসংখ্যা।
সাকিবের তুলনায় তাইজুলের যাত্রা আরও উল্লেখযোগ্য। দেশের বাইরে টেস্ট খেলার সুযোগ কম পেলেও ৫৭ ম্যাচে মাত্র ১০১ ইনিংস বোলিং করেই ২৪৬ উইকেটে পৌঁছেছেন তিনি। সাকিব এই সংখ্যায় পৌঁছেছিলেন ১২১ ইনিংসে। বোলিং গড় ও স্ট্রাইক রেটে তাইজুল আরও খানিকটা এগিয়ে-তার গড় ৩১.১৪ এবং স্ট্রাইক রেট ৬১.২; সাকিবের গড় ৩১.৭২ আর স্ট্রাইক রেট ৬৩.৭।
ইনিংসে পাঁচ উইকেট শিকারের দিক থেকে অবশ্য এখনও এগিয়ে আছেন সাকিব, যিনি ১৯ বার এই কীর্তি গড়েছেন। তবে তাইজুলের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য-১৭ বার ইনিংসে পাঁচ উইকেট এবং দুইবার ম্যাচে ১০ উইকেট।
আয়ারল্যান্ডের ইনিংসটিই তাইজুলের ক্যারিয়ারের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে রইল। দ্বিতীয় দিনে তিনি হ্যারি টেক্টরকে ফেরান, আর তৃতীয় দিনে প্রথম সেশনে তুলে নেন স্টিভেন দোহেনি এবং অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনের উইকেট। পরে শেষ ব্যাটসম্যান ম্যাথু হামফ্রিসকে আউট করেই ছুঁয়ে ফেলেন দেশের টেস্ট বোলিংয়ের শীর্ষস্থান। ৩৫.৩ ওভারে ৬ মেডেনসহ ৭৬ রান দিয়ে চার উইকেট ছিল তার ইনিংসের প্রাপ্তি।
এই সময়টায় বাংলাদেশ দলের প্রধান স্পিন শক্তিও তিনি। সাকিবের রাজনৈতিক ব্যস্ততা এবং দীর্ঘ অনুপস্থিতির মধ্যে শেষ ১০ টেস্টে তাইজুল নিয়েছেন ৫০ উইকেট, বল হাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন দলে। ধারাবাহিকতায় নিজেকে আরও প্রতিষ্ঠিত করেছেন সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য টেস্ট বোলার হিসেবে।
বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসের উইকেট তালিকায় তাইজুল-সাকিব যুগ্মভাবে শীর্ষে। তাদের পরের অবস্থানেই আছেন মেহেদী হাসান মিরাজ, যার উইকেট সংখ্যা ২০৯। এরপর আছেন মোহাম্মদ রফিকের ১০০ উইকেট এবং মাশরাফি বিন মুর্তজার ৭৮ উইকেট।