দেশের ফুটবলে ফিক্সিং কাণ্ড নতুন নয়। প্রতিপক্ষকে ম্যাচ ছেড়ে দেয়া ও নির্দিষ্ট স্কোরলাইনে গেম শেষ করার জন্য ক্লাব ও ফুটবলারদের লোভনীয় প্রস্তাব দিতো অনলাইন বেটিং সাইট ও বাজিকররা। তাদের ফাঁদে পা দিয়ে শাস্তির মুখেও পড়েছিল কয়েকটি ক্লাব। বিগত কয়েক বছর ফিক্সিংয়ের অভিযোগ কম হলেও এবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে আবারও উঠেছে ফিক্সিংয়ের অভিযোগ।
এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) পর্যবেক্ষক দল তিন ক্লাবে বিরুদ্ধে বাফুফের কাছে চিঠি দিয়েছে। সন্দেহজনক ম্যাচ খেলায় এএফসির অভিযুক্ত ক্লাবের তালিকায় রয়েছে, চট্টগ্রাম আবাহনী, ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ও ফকিরেরপুল ইয়াংমেন্স। তবে অভিযুক্ত ক্লাবগুলোর কর্মকর্তাদের দাবি ফিক্সিং কাণ্ডে যুক্ত নন তারা। এদিকে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিযুক্ত ক্লাবগুলোকে দ্রুতই ডাকবে বাফুফে।
বাফুফের পাতানো ম্যাচ শনাক্তকরণ কমিটির চেয়ারম্যান হুমায়ুন খালিদ বলেন, আমরা মিটিংয়ে চিঠি পেয়েছি। বিষয়টা বাফুফে জানাবে। বাফুফের কিছু ইন্টারনাল কাজ আছে। আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার মতো অবস্থানে তারা নেই।
এএফসির পর্যবেক্ষক দলের কাছ থেকে চিঠি পেয়ে অভিযুক্ত তিন ক্লাবের কাছে এর ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছে বাফুফে। লিগে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই ঢাকা মোহামেডানের কাছে ৬-০ গোলে হেরেছে ওয়ান্ডারার্স। সেই স্কোরলাইন নিয়েই সন্দেহ এএফসির পর্যবেক্ষক দলের। অন্যদিকে, ঢাকা আবাহনীর সঙ্গে চট্টগ্রাম আবাহনী ও ফকিরেরপুলের সঙ্গে বাংলাদেশ পুলিশের ম্যাচ নিয়ে সন্দেহের তীর ছুঁড়েছে এএফসি।
ঢাকা ওয়ান্ডার্সের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শাহীন বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, আমাদের ক্লাব ম্যাচ ফিক্সিংয়ের সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত না। আমার চোখে এরকম কোনো ঘটনা পড়েনি। বাইরে থেকে যদি কেউ এমন করে থাকে বা কোনো প্রমাণ থাকে, তাহলে সেটা আমাকে দিতে পারতো। ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সভাপতির সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্তটা আমরা নিতে পারতাম।
চট্টগ্রাম আবাহনীর কোচ সাইফুর রহমান মনি ফোনে বলেন, এই ধরনের কোনো কিছুর সঙ্গে আমার ক্লাব জড়িত বলে আমি মনে করি না। এ ধরনের কোনো কিছুর ইঙ্গিত যদি আমি পেতাম বা বুঝতাম, তাহলে আমি নিজেই এর বিরুদ্ধে দাঁড়াতাম।
তৃতীয় পক্ষ বা ক্লাবের মধ্যে কেউ ফিক্সিং করে থাকে তারও কঠোর শাস্তির দাবি জানান অভিযুক্ত ক্লাবগুলোর কর্তারা। ঢাকা ওয়ান্ডার্সের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বাফুফে যদি আমাদেরকে প্রমাণগুলো দিতে পারে বা যদি আমরা পাই, আমরা অবশ্যই এ ব্যাপারে প্রদক্ষেপ নেব।’
এদিকে, যোগাযোগ করেও অবস্থান জানা যায়নি ফকিরেরপুল ইয়াংমেন্সের।