তর্ক সাপেক্ষে পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ফুটবল। এই খেলায় মাঠে রেফারির সিদ্ধান্তকেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হিসেবে গণ্য করা হয়। ফুটবলের মাঠে লাল এবং হলুদ কার্ড- মাঠে শৃঙ্খলা ও শাস্তির প্রতীক হিসেবে ব্যবহার হলেও এবার দেখা গেলো এক অভাবনীয় দৃশ্য।
সম্প্রতি চিলিতে চলমান অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপে দেখা যায়- রেফারির সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করতে এক কোচের হাতে উঠল ‘গ্রিন কার্ড’। যা ফুটবল ইতিহাসে প্রথম।
নিয়ম অনুযায়ী, গ্রিন কার্ড দেখানো হলে রেফারি বাধ্য থাকবেন সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে। তিনি ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) মনিটরে গিয়ে ঘটনাটি পর্যালোচনা করেন এবং শেষ পর্যন্ত পেনাল্টি বাতিল করে দেন। সেইসঙ্গে স্পেনের খেলোয়াড়কে ডাইভ দেওয়ার জন্য হলুদ কার্ড দেখানো হয়।
উল্লেখ্য, ফিফার নতুন এই পরীক্ষামূলক উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হলো মাঠের বিতর্ক কমানো ও কোচদেরও সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জের সুযোগ দেওয়া। প্রতিটি দল ম্যাচে সর্বোচ্চ দুবার এ সুযোগ পাবে। কোচরা গ্রিন কার্ড (কিছু টুর্নামেন্টে নীল বা বেগুনি রঙেরও হতে পারে) প্রদর্শন করলেই রেফারি বাধ্য থাকবেন ঘটনার ভিডিও পুনর্মূল্যায়ন করতে।
এদিন স্পেনের বিপক্ষে একটি বিতর্কিত পেনাল্টি সিদ্ধান্তে আপত্তি জানাতে মরক্কোর কোচ মোহাম্মদ ওহাবি রেফারিকে দেখালেন এই নতুন কার্ড। এটি অনেকটা ক্রিকেটের ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম (ডিআরএস), টেনিসের হক-আই বা আমেরিকান ফুটবলের কোচেস চ্যালেঞ্জের মতো। এরই মধ্যে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপে স্পেন-মরক্কো ছাড়াও মেক্সিকোর ম্যাচে ব্যবহৃত হয়েছে এই নিয়ম।
এরআগে, ২০২৩ সালে পর্তুগালে নারীদের একটি ম্যাচে প্রথমবার ‘হোয়াইট কার্ড’ চালু করা হয়েছিল, যা ন্যায্য খেলা বা ফেয়ার প্লের স্বীকৃতি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। তবে সেটি জনপ্রিয়তা পায়নি।
ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো আশা প্রকাশ করেছেন, এই নতুন কার্ড ফুটবলে স্বচ্ছতা আনবে ও বিতর্ক কমাবে। তবে ফুটবলের দুনিয়ায় এই উদ্যোগ টিকে থাকবে কি না, তা জানাবে সময়ই।
এদিকে নতুন এই নিয়মে বেশ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ফুটবল বোদ্ধারা। তারা আশা প্রকাশ করে বলছেন, এই নিয়মে কিছুটা হলেও বিতর্ক কমবে পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় এই খেলাটি থেকে। এই নিয়মের জন্য ফিফাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন, ‘গ্রিন কার্ড’ ফুটবলকে নতুন যুগে প্রবেশ করাতে পারে।