একাই পথ চলে যে ভৌতিক পাথর

মহাবিশ্ব জুড়ে স্থান ভিন্নতায় প্রকৃতি ভিন্ন ভিন্ন সাজে মুগ্ধতা ছড়ায়। পাহাড়, বন, নদী, সমুদ্র, ঝর্ণা ইত্যাদি আমাদের বিমোহিত করে আপন সৌন্দর্যে। স্থান ভেদে প্রকৃতির রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন রূপ, পরিচয় ও সৌন্দর্য। যেমন কোন নদীর পানি কালচে হয় আবার কোনোটা হয় নীল। কোথাও হয়ত দেখবেন পাহাড় সযত্নে তার বুকে আগলে রাখে সবুজ বনানি আবার কোথাও জমাট বাঁধা শীতল বরফ।

moving ston 2

বিশ্ব জুড়ে প্রকৃতি তার রূপ সৌন্দর্যে শুধু মুগ্ধ করে এমন নয়, কখনো কখনো বিস্ময় ও কৌতূহলের জন্ম দেয়। প্রকৃতিতে এমন কিছু ভৌতিক দৃশ্য এবং ঘটনার দেখf মিলে প্রায়ই, যা দেখলে যে কারও চোখ কপালে ওঠার মতো অবস্থা হতে পারে। ধরুন আপনি দেখছেন বিশাল আকৃতির পাথর নড়াচড়া করছে একাই। আপনি হয়ত ভাববেন সেটি আপনার দেখার ভুল। কিন্তু যখন দেখবেন সেই পাথর কারও সাহায্য ছাড়াই নিজের স্থান পরিবর্তন করছে এবং এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তর হচ্ছে! এমন দৃশ্যে নিজের চোখকেও অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে কিংবা ধরে নিবেন এটি কোনো ভৌতিক দৃশ্য। তবে এমন ভৌতিক দৃশ্যের রহস্য জানার প্রবল ইচ্ছা জেগে উঠবে যে কারও মনে।

moving ston

বলছি ‘রোলিং স্টোনস’ নামের পাথরের কথা। এই ‘রোলিং স্টোনস’ বা ‘সেলিং স্টোনস’ কিংবা ‘মুভিং স্টোনস’ এমন একটি ভূতাত্ত্বিক ঘটনা যেখানে পাথর কোনো প্রাণী বা মানুষের বল ছাড়াই মসৃণ উপত্যকা বরাবর চলে। এছাড়াও চলার সময় তারা লম্বা দাগ (চিহ্ন) রেখে যায়।

moving ston 6

৩০০ কেজি পর্যন্ত ওজনের পাথরগুলোর এই গতি বা চলাচলের ঘটনা ঘটে শীতের পুকুরে বড়ো আকারের বরফের টুকরো ভাঙার কারণে। যা রোদেলা দিনে অধিক তাপমাত্রার কারণে হয়। পাতলা ভাসমান বরফ, যা ঠান্ডা শীতের রাতে জমে থাকে, গলে গেলে বাতাসের দ্বারা মিনিটে ৫ মিটার গতিতে চালিত হয়। ফলে পাথরগুলো চলে এবং পদচিহ্ন স্বরূপ দাগ ফেলে যায়। মসৃণ পৃষ্ঠবিশিষ্ট পাথর বাঁক-বিহীন দাগ রেখে যায়, আর খসখসে পৃষ্ঠবিশিষ্ট পাথর সোজা দাগ তৈরি করে।

moving ston 3

ম্যাজিকের মতো অদ্ভুত এই ভৌতিক দৃশ্য দেখতে যেতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের ডেথ ভ্যালি ন্যাশনাল পার্ক (ক্যালিফোর্নিয়া) এবং লিটল বনি ক্লেয়ার প্লায়ায় (নেভাদা)।