মানুষ না এআই’য়ের লেখা সংবাদে পাঠকের আস্থা বেশি

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি বা করপোরেট বিবৃতির প্রতি পাঠকের আস্থা অনেকটাই নির্ভর করে লেখকের পরিচয়ের ওপর। যদি বলা হয় লেখাটি একজন মানুষ লিখেছেন, পাঠক সেটিকে বেশি বিশ্বাসযোগ্য মনে করেন। আর যদি জানানো হয়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) লিখেছে, তখন সেই আস্থা কমে যায়।

এমন তথ্য উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের কানসাস বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায়। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক গবেষণা সাময়িকী করপোরেট কমিউনিকেশনস: অ্যান ইন্টারন্যাশনাল জার্নালের প্রকাশিত হয়েছে গবেষণার ফলাফল।

গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন কানসাস বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ক্যামেরন পিয়ার্সি, পিএইচডি গবেষক আইমান আলহাম্মাদ এবং সহকারী অধ্যাপক ক্রিস্টোফার এথারিজ। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল একটি প্রশ্নের উত্তর খোঁজা- ‘লেখাটি মানুষ লিখেছে না এআই, জানলে কি পাঠকের দৃষ্টিভঙ্গি বদলায়?’

গবেষণাটি ছিল বহুপদ্ধতিভিত্তিক। অংশগ্রহণকারীদের সামনে একটি কাল্পনিক সংকট পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়- ‘চাঙ্কি চকলেট কোম্পানির কিছু পণ্য খেয়ে গ্রাহক অসুস্থ হয়ে পড়েন, যা কর্মীদের ইচ্ছাকৃত অপকর্মের কারণে ঘটে।

এরপর অংশগ্রহণকারীদের তিন ধরনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পড়তে দেওয়া হয়: তথ্যভিত্তিক, সহানুভূতিশীল এবং ক্ষমা প্রার্থনামূলক। প্রতিটি বিজ্ঞপ্তিতেই আলাদা করে জানানো হয়, এটি একজন মানুষ লিখেছেন, নাকি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা লিখেছে।

গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, যারা ভেবেছেন সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি একজন মানুষ লিখেছেন, তারা বার্তাটিকে অনেক বেশি বিশ্বাসযোগ্য ও কার্যকর মনে করেছেন। কিন্তু যখন বলা হয়েছে, বিজ্ঞপ্তিটি এআই লিখেছে, তখন পাঠকের প্রতিক্রিয়া হয়েছে সন্দেহপ্রবণ বা নিরপেক্ষ।

তবে বার্তার ধরন তথ্যভিত্তিক, ক্ষমা প্রার্থনামূলক বা সহানুভূতিশীল এসব ক্ষেত্রে পাঠকের প্রতিক্রিয়ায় তেমন পার্থক্য পাওয়া যায়নি।

সহগবেষক ক্যামেরন পিয়ার্সি বলেন, মানুষ ও এআইয়ের লেখা আলাদা করা কঠিন হলেও লেখকের পরিচয় জানলে পাঠকের প্রতিক্রিয়া ভিন্ন হয়।

অন্যদিকে ক্রিস্টোফার এথারিজ মন্তব্য করেন, আপনি যদি লেখার কাজে এআই ব্যবহার করেন, তাহলে অবশ্যই স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে, ভুলের দায় নিতে হবে এবং পাঠকের প্রতিক্রিয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

গবেষকেরা মত দিয়েছেন, সংকটকালে করপোরেট বার্তা তৈরিতে এআই ব্যবহার করা গেলেও মানুষের সম্পাদনা, দায়দায়িত্ব ও জবাবদিহির জায়গা পাশ কাটানো যাবে না।