নিষিদ্ধ হওয়া কিছু কনটেন্ট নির্মাতাকে (ক্রিয়েটর) আবার ইউটিউবে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গুগলের মালিকানাধীন প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব। নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ সাপেক্ষে তারা নতুন অ্যাকাউন্ট খুলে ভিডিও আপলোড করতে পারবেন। এই পদক্ষেপে এমন কিছু ভিডিও আবার প্ল্যাটফর্মে দেখা যেতে পারে, যেগুলো একসময় ইউটিউবের পুরনো নীতিমালা লঙ্ঘনের কারণে সরিয়ে ফেলা হয়েছিল।
সম্প্রতি ইউটিউব এক ব্লগ পোস্টে জানায়, নীতিমালা সংশোধনের পর তারা এখন কিছু ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করছে। এ প্রেক্ষাপটে যেসব চ্যানেল কোভিড-১৯, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কিংবা বিতর্কিত রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে বন্ধ হয়েছিল, তাদের পুনরায় ইউটিউবে ফেরার সুযোগ দেওয়া হবে।
ইউটিউব বলছে, তারা চায় ‘দ্বিতীয় সুযোগ পাওয়ার যোগ্য’ নির্মাতারা আবারও কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন। তবে এই সুযোগ সবাই একসঙ্গে পাবেন না। ধাপে ধাপে রিভিউ ও আবেদন গ্রহণ করা হবে, যাতে সঠিক যাচাই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা যায়।
নিষেধাজ্ঞার পর অন্তত এক বছর পার হলে নির্মাতারা এই সুযোগের আবেদন করতে পারবেন। তারা পুরনো চ্যানেলে লগইন করলে নতুন অ্যাকাউন্ট তৈরির অনুরোধ পাঠানোর অপশন পাবেন। তবে সাবস্ক্রাইবার ও পুরোনো চ্যানেল ফিরে পাবেন না। চাইলে পুরনো ভিডিওগুলো আবার আপলোড করা যাবে, তবে তা ইউটিউবের বর্তমান কমিউনিটি গাইডলাইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।
এই সুবিধা পাবে না এমন নির্মাতাদের মধ্যে থাকবেন
- যারা কপিরাইট নীতিমালা লঙ্ঘন করেছেন
- যারা ইউটিউবের ‘ক্রিয়েটর রেসপনসিবিলিটি’ নীতি ভেঙেছেন
- যারা নিজেরাই চ্যানেল ডিলিট করে ফেলেছেন
নতুনভাবে যেসব নির্মাতারা ইউটিউবে ফিরবেন, তারা ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামেও যোগ দিতে পারবেন, তবে তাদের প্রয়োজনীয় যোগ্যতা পূরণ করতে হবে। এছাড়া তাদের জন্যও প্রযোজ্য থাকবে ইউটিউবের প্রচলিত ‘তিন স্ট্রাইকের’ নিয়ম।
এই পদক্ষেপকে ইউটিউব বলছে ‘স্বাধীন মতপ্রকাশে প্রতিশ্রুতি রক্ষার অংশ’। প্রতিষ্ঠানটির এক মুখপাত্র জানান, ‘আমরা চাই ইউজাররা স্পষ্টভাবে জানুক কোন নিয়ম ভাঙলে তারা নিষিদ্ধ হতে পারেন, আবার কীভাবে ফেরার সুযোগ পেতে পারেন।’
অন্যদিকে, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম-মালিক প্রতিষ্ঠান মেটার সিইও মার্ক জুকারবার্গও সম্প্রতি জানিয়েছেন, তারাও স্বাধীন মতপ্রকাশে ফিরছে এবং আর তৃতীয় পক্ষের ফ্যাক্টচেকিংয়ের ওপর একচেটিয়াভাবে নির্ভর করবে না।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর এই ধরণের অবস্থান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নীতিমালায় বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এর ফলে বিতর্কিত অনেক বিষয় ও কণ্ঠ ইউটিউবে আবারও ফিরে আসতে পারে, যা নতুন করে প্রশ্ন তুলতে পারে ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা’ বনাম ‘দায়িত্বশীল কনটেন্ট’ এর ভারসাম্য নিয়ে।