দেশের সব স্থলবন্দরে সেবা মাশুল ৫ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে নতুন করে ব্যয়চাপ তৈরির শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ (বিএসপিএ) ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে, যা আগামী ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
অন্য স্থলবন্দরের তুলনায় সেবার পরিমাণ ও ব্যয় বেশি হওয়ায় বেনাপোল স্থলবন্দরের জন্য আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর বেনাপোলে বর্তমানে ২৭ ধরনের সেবার বিপরীতে মাশুল আদায় করা হয়।
নতুন প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বেনাপোল স্থলবন্দর ব্যবহারকারী যাত্রীদের জন্য মাশুল ২০২৫ সালের ৪৯ টাকা ৭৯ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২০২৬ সালের জন্য ৫২ টাকা ২৭ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। আমদানি করা বাস, ট্রাক ও লরি প্রবেশে মাশুল ১৭৫ টাকা ৯০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৮৪ টাকা ৭০ পয়সা। মোটরকার, জিপ, পিকআপ ও থ্রি-হুইলারের জন্য মাশুল নির্ধারণ করা হয়েছে ১১০ টাকা ৮২ পয়সা এবং মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেলের জন্য ৩৬ টাকা ৯৫ পয়সা।
এছাড়া ট্রাক ও লরির ক্ষেত্রে ওজন মাপার যন্ত্র ব্যবহারে দিতে হবে ৮৮ টাকা ৬৫ পয়সা। কাগজপত্র প্রক্রিয়াকরণ মাশুল নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯৫ টাকা ৭ পয়সা। কোনো যানবাহন ইয়ার্ডে রাতযাপন করলে দিতে হবে ১১১ টাকা ৪৯ পয়সা। গুদামে পণ্য রাখার ক্ষেত্রেও সময়ভেদে মাশুল বৃদ্ধি করা হয়েছে। সব মিলিয়ে বেনাপোল বন্দরের প্রতিটি সেবাতেই বাড়তি খরচ যুক্ত হচ্ছে।
বেনাপোল ছাড়া দেশের অন্য স্থলবন্দরগুলোতেও একই হারে ৫ শতাংশ মাশুল বৃদ্ধি কার্যকর হবে। এসব বন্দরে যাত্রী মাশুল বেড়ে ৫২ টাকা ২৭ পয়সা হয়েছে। বাস, ট্রাক ও লরির জন্য মাশুল নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫৯ টাকা ২২ পয়সা, মোটরকার ও জিপের জন্য ৯৫ টাকা ৫২ পয়সা এবং মোটরসাইকেল, স্কুটার, বেবি ট্যাক্সি ও থ্রি-হুইলারের জন্য ৪৭ টাকা ৮৩ পয়সা। পাশাপাশি পণ্যভেদে আমদানির ক্ষেত্রেও মাশুল ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।
বাংলাদেশ স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) ও উপ-সচিব মো. শামীম হোসেন বলেন, ‘স্থলবন্দরের আয়ের প্রধান উৎস মাশুল। জ্বালানি, রক্ষণাবেক্ষণ ও জনবল খাতে ব্যয় বাড়ছে। তাই প্রতিবছরের মতো এবারও মাশুল সমন্বয় করা হয়েছে। নতুন হার ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, মাশুল বৃদ্ধি আমদানি ব্যয় বাড়াবে এবং তার প্রভাব সরাসরি খুচরা বাজারে গিয়ে পড়বে। বাজারে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে। ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়লে সাধারণ মানুষই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’