সূচকের বড় পতন, মূলধন হারাল ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা

দেশের শেয়ারবাজারে সপ্তাহজুড়ে (২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর) পাঁচ কার্যদিবসের লেনদেনে শেষে সূচকের বড় পতনের সাথে বাজার মূলধন হারিয়েছে সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা। একইসাথে আগের সপ্তাহের তুলনায় লেনদেনও কমেছে।

প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে ডিএসইএক্স কমেছে ১৭৬.৫৫ পয়েন্ট বা ৩.১৩ শতাংশ, বিনিয়োগকারীরা বাজার মূলধন হারিয়েছে ১৩ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই কমেছে ৫২১.৪৫ পয়েন্ট বা ৩.৩০ শতাংশ। 

শনিবার (৫ অক্টোবর) ডিএসই ও সিএসইর বাজার চিত্রে এ তথ্য উঠে এসেছে।

ডিএসইর বাজার চিত্রে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে ডিএসইতে পাঁচ কার্যদিবসে লেনদেন শেষে ডিএসইএক্স ১৭৬.৫৫ পয়েন্ট বা ৩.১৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৪৫৬২.৫৮ পয়েন্টে। এ সূচক সপ্তাহের শুরুতে ছিল ৫৬৩৯.১৩ পয়েন্টে। ডিএসই শরীয়াহ ৪০.৬৭ পয়েন্ট বা ৩.২২ শতাংশ কমে ১২২১.২৭ পয়েন্টে ডিএস৩০ সূচক ৭৪.০৮ পয়েন্ট বা ৩.৫৯ পয়েন্ট কমে ১৯৯০.৮৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

এদিকে গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজারে মোট ৮১ কোটি ৭৭ লাখ শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। এসব শেয়ার ও ফান্ডেরর মোট বাজার মূল্য দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৩০ কোটি ৯ লাখ টাকা। আর আগের সপ্তাহটিতে মোট লেনদেন হয়েছিল ১১২ কোটি ৬৯ লাখ শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের আর বাজার মূল্য ছিল ৩ হাজার ৩৯৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এতে করে সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন কমেছে ১ হাজার ২৬৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা বা ৩৭.২৬ শতাংশ।  

এদিকে সপ্তাহটিতে গড়ে প্রতিদিন লেনদেন হয়েছে ৪২৬ কোটি ২১ লাখ টাকা, আগের সপ্তাহে এ লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৬৭৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা। 

ডিএসইর বাজার মূলধন গত সপ্তাহের লেনদেনের শুরুতেই ছিল ৬ লাখ ৮৫ হাজার ৬২১ কোটি ২৪ লাখ টাকা। আর সপ্তাহ শেষে গত বৃহস্পতিবার বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৭২ হাজার ১১৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে মূলধন কমেছে ১৩ হাজার ৫০৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা বা ১.৯৭ শতাংশ। 

টানা দরপতনে থাকা ডিএসইতে গত সপ্তাহে ৪১৩টি কোম্পানি ও ফান্ড লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এরমধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ৫৭টির, কমেছে ৩৩১টির, অপরিবর্তিত ছিল ৮টি, এবং লেনদেনই হয়নি ১৭ টির। 

সপ্তাহটিতে লেনদেনের দিক দিয়ে শীর্ষ দশ কোম্পানির তালিকায় যথাক্রমে ছিল- ইসলামী ব্যাংক, গ্রামীণফোন, ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, এমজেএল বাংলাদেশ, ইবনেসিনা, ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, প্রগতি লাইফ ইন্সুরেন্স, এডিএন টেলিকম ও সোনালী আঁশ।      

এদিকে সপ্তাহটিতে ডিএসইতে টপটেন গেইনারের তালিকায় শীর্ষ দশ কোম্পানির তালিকায় উঠেছে- বিআইএফসি, আফতাট অটো, এডিএন টেলিকম, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, শ্যামপুর সুগার মিলস, লিবরা ইনফিউশন, রুপালী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি, আনলিমা ইয়ার্ন, দেশ গার্মেন্টস ও আইসিবি সোনালী ওয়ান।  

এছাড়া টপটেন লুজারের শীর্ষ দশ কোম্পানির তালিকায় উঠেছে -লিন্ডে বাংলাদেশ, কাট্টালি টেক্সটাইল, মিরাকল ইন্ডাষ্ট্রিজ, বে-লিজিং, ওয়েস্ট মেরিন শিপইয়ার্ড, ইন্দো বাংলা ফার্মা, অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেন, জিএসপি ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল ট্রি কোম্পানি ও ফারচুন সুজ লিমিটেড। 

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সপ্তাহজুড়ে (২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর) পাচঁ কার্যদিবসে সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৫২১.৪৫ পয়েন্ট বা ৩.৩০ শতাংশ কমে ১৫২৭১.৭৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহে সূচকটি ছিল ১৫৭৯৩.২২ পয়েন্টে। 

সিএসইতে সপ্তাহটিতে মোট লেনদেন হয়েছে ৪১ কোটি ১৩ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয়েছিল ৭২ কোটি ৬০ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন কমেছে ৩১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা বা ৪৩.৩৪ শতাংশ। 

এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ৩১৪টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৫২টির, কমেছে ২৫২টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১০টির।