বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের ক্ষমতার অবসান ঘটেছে। দুর্নীতি, অর্থপাচার ও ঋণ কেলেঙ্কারির অভিযোগে ওই আমলের মন্ত্রী-এমপিসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের তিন শতাধিক ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা (বিএফআইইউ)।
সংস্থাটি বলছে, এসব হিসাবের মাধ্যমে সন্দেহজনক ব্যক্তিরা যাতে আর্থিক লেনদেন করতে না পারে, তার জন্যই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এসব হিসাব থেকে অর্থপাচার হয়েছে কিনা বা কি উপায়ে হয়েছে, সে বিষয়ে তদন্ত করছে সংস্থাটি।
পাচারের সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে, অর্থ ফেরত আনা অনেকটাই সম্ভব বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, শুধু ব্যাংক হিসাব জব্দ করলেই অর্থ ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়, প্রয়োজন কূটনৈতিক তৎপরতা।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটি (জিএফআই) এর তথ্যমতে, গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনা সরকারের সময় বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে প্রায় ১৪ লাখ কোটি টাকা। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এসব অর্থ ফেরত আনতে উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্তর্বর্তী সরকার। এরই অংশ হিসেবে সন্দেহজনক ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে বিএফআইইউ।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) সাবেক মহাপরিচালক তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, অর্থপাচারীরা এত বোকা না যে, ব্যাংকের হিসাবে তারা বেশি টাকা রাখবে। তারাও জানে যে কোনো সময় ব্যাংক হিসাব বন্ধ হয়ে যেতে পারে। অফিসিয়াল কোনো চ্যানেল থেকে আসলে অর্থপাচার করাও হয় না। অর্থপাচার রোধ করতে হলে পাচারকারীর দেশে ব্যবসা বন্ধ করা, বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে পাচারকারীদের সখ্যতা বন্ধ করতে হবে।