বিশ্ববাজারে আগামী দুই বছর পণ্যের দাম নিম্নমুখী থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিশ্বব্যাংকের কমোডিটি মার্কেটস আউটলুক শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ববাজারে ইতোমধ্যে পণ্যমূল্য স্থিতিশীল হতে শুরু করেছে। ২০২৪ সালে পণ্যমূল্য সার্বিকভাবে ৩ শতাংশ কমেছে। আগামী দুই বছরে পণ্যমূল্য কমার এই ধারা অব্যাহত থাকবে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালে বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্য ৫ শতাংশ এবং ২০২৬ সালে তা আরও ২ শতাংশ কমবে। ফলে পণ্যমূল্য ২০২০ সালের পর সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসবে। সব মিলিয়ে ২০২৫ সালে খাদ্যমূল্য ৯ শতাংশ এবং জ্বালানির দাম ৬ শতাংশ কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
করোনা মহামারির কারণে ২০২১ সাল থেকেই বিশ্বে পণ্যমূল্য বাড়তে শুরু করে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে পরিস্থিতির অবনতি হলে সেটা আরও বেড়ে যায়। দেশে দেশে মূল্যস্ফীতি রেকর্ড উচ্চতায় ওঠে।
চলতি বছরের এপ্রিল এবং ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৯০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। যার কারণ ছিল ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা। তবে চাহিদা কমে যাওয়ায় পরে দাম কমেছে। সেই সঙ্গে বৈশ্বিক জিডিপিতে তেলের যে ভূমিকা ছিল, তার অনুপাতও কমে আসছে। ২০২৪ সালে বিশ্ববাজারে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের গড় দাম ছিল ৮০ ডলার। বিশ্বব্যাংকের ধারণা, আগামী বছর অপরিশোধিত তেলের গড় দাম ব্যারেলপ্রতি ৭৩ ডলার এবং ২০২৬ সালে ৭২ ডলারে নেমে আসবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, খাদ্য ও জ্বালানির মূল্যহ্রাসের কারণে সামগ্রিকভাবে বিশ্ব মূল্যস্ফীতির হারও আগামী বছর কমবে। পণ্যমূল্য ও মূল্যস্ফীতি কমলে বিভিন্ন দেশের নীতি সুদহারও লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে।
বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রধান অর্থনীতিবিদ ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইন্দরমিত গিল বলেছেন, পণ্যমূল্য হ্রাস এবং পর্যাপ্ত সরবরাহব্যবস্থা ভূরাজনৈতিক সংঘাত সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারে। প্রতিকূল আবহাওয়াসহ অন্যান্য জটিলতা চলতি বছর ৭২ কোটি ৫০ লাখের বেশি মানুষকে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে।