দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, শ্রমিক অসন্তোষ ও বৈশ্বিক বাজারে শুল্ক বাড়ানোর হুমকির মধ্যেও তৈরি পোশাকশিল্পের রপ্তানি খাতে শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধির এই খাত আশার আলো দেখাচ্ছে।
চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে ইইউতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৭ শতাংশ, যা ভারতের (২৬%), চীনের (২৫%) ও ভিয়েতনামের (১৭%) তুলনায় অনেক বেশি। ইউরোস্ট্যাটের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এই সময়ের মধ্যে ইইউতে বাংলাদেশ রপ্তানি করেছে প্রায় ৩৬৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। এই বাজারে দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানিকারক হিসেবে চীনের পরই বাংলাদেশের অবস্থান।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক নীতির কারণে চীন ও ভিয়েতনামের জন্য মার্কিন বাজার চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে। এতে এসব দেশের পোশাক রপ্তানি কমতে পারে এবং তারা ইউরোপের দিকে ঝুঁকতে পারে। ফলে ভবিষ্যতে প্রতিযোগিতা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গত ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র ৬৫টি দেশের পণ্যে বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়, যার আওতায় বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও শুল্কহার বেড়ে ৫২ শতাংশে দাঁড়াতে পারে। তবে আপাতত ৯ এপ্রিল থেকে ৯০ দিনের জন্য এই শুল্ক কার্যকর স্থগিত রাখা হয়েছে।
ইইউর তৈরি পোশাক আমদানির বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে চীনের রপ্তানি হয়েছে প্রায় ৪৫৫ কোটি ডলারের, বাংলাদেশের ৩৬৯ কোটি, তুরস্কের ১৬১ কোটি এবং ভারতের ৮৭ কোটি ডলারের পণ্য। একই সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন মোট ১ হাজার ৬১০ কোটি ডলারের পোশাক আমদানি করেছে।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল জানান, ইউরোপে বাংলাদেশের সাফল্যের পেছনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ইউরোপের ক্রমশ ঘুরে দাঁড়ানো অর্থনীতি, উন্নত মানের পণ্য রপ্তানির সক্ষমতা এবং কর্মপরিবেশ ও কারখানার নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন। ফলে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড ও ক্রেতাদের আস্থা বেড়েছে। বর্তমানে রপ্তানি আদেশের পরিমাণও আশাব্যঞ্জক বলে জানান তিনি।