এনবিআর বিলপ্তির কারণ হিসেবে যা জানা গেলো

বাংলাদেশের কর ব্যবস্থায় দীর্ঘদিনের কাঠামোগত জটিলতা ও স্বার্থের দ্বন্দ্ব দূর করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। কর প্রশাসনকে আধুনিক, দক্ষ ও জবাবদিহিমূলক করে তুলতে গঠিত হচ্ছে দুটি পৃথক বিভাগ— রাজস্ব নীতি বিভাগ ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ।

সরকার বলছে, এটি কেবল একটি প্রশাসনিক রদবদল নয়, বরং দেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের ভিত্তি গঠনের এক সাহসী পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে কর ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বাড়বে, কর জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধি পাবে এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত হবে।

৫ দশকের পুরনো প্রতিষ্ঠান এনবিআর ধারাবাহিকভাবে তার লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার। বর্তমানে বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত মাত্র ৭.৪ শতাংশ, যেখানে বিশ্ব গড় ১৬.৬ শতাংশ এবং প্রতিবেশী মালয়েশিয়ায় ১১.৬ শতাংশ।

এই অস্বাভাবিক পিছিয়ে থাকা অবস্থার কারণ হিসেবে উঠে এসেছে:

নীতি নির্ধারণ ও বাস্তবায়নের দ্বৈত ভূমিকা, যা স্বার্থের দ্বন্দ্ব তৈরি করে।

দুর্বল জবাবদিহিতা ও নজরদারি, যার ফলে কর ফাঁকি রোধে ব্যর্থতা।

অদক্ষতা ও প্রশাসনিক ওভারল্যাপ, বিশেষত অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের প্রধান এবং এনবিআর চেয়ারম্যান একই ব্যক্তি হওয়া।

ব্যবসায়ী মহলের অভিযোগ— নীতিনির্ধারণ প্রায়শই ন্যায্যতা ও প্রবৃদ্ধির চেয়ে রাজস্ব সংগ্রহকেই অগ্রাধিকার দেয়।

প্রণোদনার অভাব ও কর্মদক্ষতা পরিমাপে সুনির্দিষ্ট মাপকাঠির অনুপস্থিতি।

সরকার মনে করছে, এই কাঠামো বজায় রাখা দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও কর সংস্কারের পথে প্রধান বাধা।