ইরানের ফর্দ, নাতানঞ্জ এবং ইস্পাহান তিনটি প্রধান পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। এতে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতের ভয়াবহ বিস্তারের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে এবং বিশ্ববাজারে তেলের দাম বড় ধরনের লাফের আসঙ্কায়। খবর গালফ নিউজ
এই হামলার পরই তেলের বাজারে ব্যাপক চাপ তৈরি হয়েছে। ব্রেন্ট তেলের দাম এক সপ্তাহেই বেড়েছে ১১ শতাংশ। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, দাম ৮০ থেকে ১০০ ডলারের ঘরে চলে যেতে পারে।
বিশ্বের এক-পঞ্চমাংশ তেল সরবরাহ হয় হরমুজ প্রণালী দিয়ে। এই প্রণালীর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। ইতিমধ্যে তেলবাহী জাহাজের ভাড়া বেড়েছে প্রায় ৯০ শতাংশ। নিরাপত্তাজনিত কারণে জাহাজের জিপিএস সিগনাল জ্যাম হওয়ার ঘটনা ঘটছে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার বারে। সম্প্রতি দুটি তেলবাহী জাহাজের সংঘর্ষে আগুন ধরে যায়।
ইরান তাদের তেল রপ্তানি অব্যাহত রেখেছে, এমনকি কিছুটা বাড়ানোরও চেষ্টা করছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি ইরান যুক্তরাষ্ট্র বা উপসাগরীয় তেল অবকাঠামোতে পাল্টা আঘাত হানে, তাহলে জ্বালানি সরবরাহে বড় বিপর্যয় ঘটতে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এখন সবকিছু নির্ভর করছে ইরানের প্রতিক্রিয়ার ওপর। কূটনৈতিক সমাধান না এলে, যুদ্ধ আরও বড় আকার ধারণ করতে পারে। আবার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে দাম কমতেও পারে।
রোববার (২২ জুন) বাংলাদেশ সময় সকাল পৌন ৬টার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিকমাধ্যম ট্রুথে ইরানে হামলার তথ্য নিশ্চিত করেন। টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি বলেন, ‘এই আঘাত ছিল শক্তির প্রদর্শন। যদি ইরান শান্তি না চায়, তাহলে আরও বড় প্রতিশোধ আসবে।’
ট্রুথ সোশ্যালে এক বার্তায় ট্রাম্প লিখেছেন, আমরা ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা- ফোর্দো, নাতানঞ্জ এবং ইস্পাহানে আমাদের অত্যন্ত সফল হামলা সম্পন্ন করেছি। সব বিমান এখন ইরানের আকাশসীমার বাইরে রয়েছে।
তিনি আরও দাবি করেন, ফোর্দো স্থাপনায় ‘পূর্ণ শক্তির বোমা হামলা’ চালানো হয়েছে এবং সব মার্কিন বিমান এখন যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার পথে রয়েছে।
ট্রাম্প আরও লিখেন, আমরা ফোর্দোতে মূল লক্ষ্যবস্তুতে সম্পূর্ণ পরিমাণ বোমা ফেলে সফলভাবে হামলা সম্পন্ন করেছি। আমাদের মহান আমেরিকান যোদ্ধাদের অভিনন্দন! পৃথিবীতে আর কোনো সেনাবাহিনী নেই যারা এই কাজ করতে পারতো। এখনই শান্তির সময়। এই বিষয়ে মনোযোগ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।