বাজারে নেই স্বস্তি

সবজি-পেঁয়াজ-মুরগির দাম বাড়তি

নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তির কোনো বার্তা নেই। সব ধরনের সবজি ও পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে, গত দুই সপ্তাহ ধরে বৃষ্টির অজুহাতে সরবরাহ কম বলে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে বেশির ভাগ সবজি। ব্রয়লার মুরগির মাংসেও বেড়েছে দর। এ ছাড়া চালের দামও ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। 

শুক্রবার (২৫ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগে পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। তবে এখন বেশির ভাগ দোকানে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। হঠাৎ করেই দুই-তিন দিন ধরে বাড়তে শুরু করেছে। গত কোরবানি ঈদেও পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল ছিল।

ঢাকার কয়েকটি খুচরা ও পাইকারি বাজার ঘুরে জানা গেছে, এখন সাধারণ গুণগত মানের সবজির কেজি কিনতে খরচ হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। এর নিচে শুধু পেঁপে (৪০ টাকা) ও আলু (৩০ টাকা) পাওয়া যাচ্ছে। লম্বা জাতের বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকায়, নতুন গোল বেগুন কিছুটা কম দামে, ৮০-৮৫ টাকা কেজিতে।

করলার কেজি ৮০-৯০ টাকা, কচুরলতি ৭০-৮০ টাকা, কাঁকরোল ৭০-৮০ টাকা, বরবটি ৯০-১০০ টাকা, ঝিঙে ৮০-৯০ এবং চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়। ঢেঁড়সের দাম ছিল মাসের শুরুতে ৩৫-৪০ টাকা, এখন তা পৌঁছেছে ৫৫-৬০ টাকায়। সবচেয়ে উদ্বেগজনক কাঁচা মরিচের দাম—এক কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়, যেখানে মাসের শুরুতে তা ছিল ৬০-১০০ টাকার মধ্যে।

এ নিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য হলো—মাসের শুরুতে ১০ দিনের টানা বৃষ্টিতে দেশের ২০টি জেলায় প্রায় ৪৩০ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। সবজি চাষের জমি নষ্ট হয়েছে সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর এলাকায়।

এদিকে চড়া দামের তালিকায় আছে ব্রয়লার মুরগিও। আগে যা পাওয়া যেত ১৫০-১৫৫ টাকায়, এখন তা বেড়ে ১৬৫-১৭৫ টাকা কেজিতে উঠেছে। ডিমের দামে অবশ্য কিছুটা স্থিতি রয়েছে—প্রতি ডজন ডিম খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকার মধ্যে।

চালের বাজারও বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে চাপের মধ্যে। মোটা চালের দাম এখন ৬০ টাকার ওপরে। মাঝারি মানের মিনিকেট বা নাজির ধান থেকে উৎপন্ন কিছু চাল মিলছে ৬৫-৭০ টাকায়। আর উন্নতমানের চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮৫ টাকার মধ্যে।

সব মিলিয়ে ভোক্তাদের জন্য বাজারে স্বস্তি নেই। এমন পরিস্থিতিতে সংসার চালাতে মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থা।

বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী ফরিদুল কবির বলেন, ‘চালের দাম আকাশছোঁয়া হলেও সরকারের কোনো তদারকি চোখে পড়ে না। বাজারে প্রতিদিন নতুন চমক। বেতন তো এত বাড়ে না, ফলে ধার করে চলতে হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জীবনযাত্রার খরচ মেটাতে গিয়ে এখন অসুখ-বিসুখ হলেও ওষুধ না খেয়ে সয়ে যেতে হয়।’