সবজির বাজারে অস্থিরতা, শুধু পেঁপেতে স্বস্তি

রাজধানীর বাজারে টানা তিন মাস ধরে সবজির দাম অস্বাভাবিকভাবে চড়া থাকলেও একমাত্র কাঁচা পেঁপেই কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচা, রামপুরা-বনশ্রীসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ সবজি ৮০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে পেঁপে পাওয়া যাচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকায়।

বাজারে প্রতি কেজি বরবটি ৬০-১০০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৬০ টাকা, ঝিঙে ৬০-৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, ধুন্দল ৪০-৮০ টাকা, করলা ৮০-১০০ টাকা, শসা ৫০-৮০ টাকা, কাঁকরোল ৬০-৮০ টাকা ও ঢেঁড়শ ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেগুনের দাম মানভেদে ৮০ থেকে ১৪০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা, টমেটো ১২০-১৪০ টাকা, কচুর লতি ৬০-৭০ টাকা, কচু ৬০ টাকা ও কচুর মুখি ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

লাউ প্রতি পিস ৬০-৭০ টাকা, চালকুমড়া ৫০ টাকা ও জালি লাউ ৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে কাঁচা কলা প্রতি হালি ৪০ টাকা। কাঁচা মরিচের দাম সর্বোচ্চ চাপে, প্রতি কেজি ১৬০-২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর সেগুনবাগিচা বাজারে কেনাকাটা করতে আসা চাকরিজীবী মাহাদী হাসান বলেন, বাজারে পেঁপে ছাড়া অন্য সব সবজির দামই অতিরিক্ত বেশি। ৮০ থেকে ১০০ টাকার নিচে সবজির সংখ্যা কমে গেছে। সাধারণ ক্রেতারা এখন ভীষণ বিপাকে।

বিক্রেতারা বলছেন, বৃষ্টির কারণে ক্ষেতের সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এবং সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। মালিবাগ বাজারের সবজি বিক্রেতা শাহিদুল ইসলাম জানান, সবজির দাম বাড়তি থাকলেও এক মাস আগের তুলনায় কিছুটা কমেছে। নতুন মৌসুমের সবজি বাজারে এলে দাম স্বাভাবিক হবে।

মুরগি, মাংস ও ডিমের বাজার

এক মাসে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা বাড়ার পর ব্রয়লার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। সোনালি মুরগি ২৬০ থেকে বেড়ে ২৮০ টাকা। তবে গরুর মাংস ৭৬০-৮০০ টাকা, খাসির মাংস ১,২০০ টাকা এবং ছাগলের মাংস ১,১০০ টাকায় অপরিবর্তিত রয়েছে। ডিমের দামও স্থিতিশীল প্রতি ডজন লাল ডিম ১৩০ টাকা, সাদা ১২০ টাকা, হাঁসের ডিম ২২০-২৩০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ২৩৫ টাকা।

মাছের বাজার

ইলিশের দামে সামান্য স্বস্তি এসেছে। কেজিতে ১০০ টাকা কমে এখন ১ কেজি ওজনের ইলিশ ২,১০০ টাকা, ৭০০-৮০০ গ্রাম ১,৭৫০-১,৮৫০ টাকা, ৫০০-৬০০ গ্রাম ১,৫০০ টাকা এবং দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ৩,০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অন্যান্য মাছের দাম এখনও চড়া। বোয়াল ৭৫০-৯০০, কোরাল ৮০০-৮৫০, আইড় ৭০০-৮০০, পাবদা ও শিং ৪০০-৫০০, ট্যাংরা ৭৫০-৮০০, কাঁচকি ৬৫০-৭০০, মলা ৫০০-৫৫০, রুই ৩৫০-৪০০, তেলাপিয়া ২৫০, পাঙাশ ২২০-২৫০, বাইলা ৮৫০, টেংরা ৮০০ এবং চিংড়ি কেজিপ্রতি ১,০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বৃষ্টির অজুহাতে ও সরবরাহ ঘাটতিতে সবজির বাজারে অস্থিরতা অব্যাহত রয়েছে। ক্রেতারা বলছেন, বাজার মনিটরিং জোরদার না হলে দাম আরও বাড়তে পারে। তবে বিক্রেতাদের আশা, নতুন মৌসুমের সবজি বাজারে উঠতে শুরু করলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হবে।