দেশের পুঁজিবাজারে দীর্ঘদিন ধরেই চলা মন্দাভাব আরও প্রকট হয়েছে। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সার্বিক লেনদেন নেমে এসেছে গত চার মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) অধিকাংশ শেয়ার ও ইউনিটের দরপতন হয়েছে। তবে এক্সচেঞ্জটির শরিয়াহ সূচক কমলেও প্রধান মূল্যসূচক ও বাছাই করা ভালো শেয়ারের সূচক সামান্য বেড়েছে। আর বাজারে বিক্রির চাপ বেশি থাকলেও ক্রেতা সংকট দেখা গেছে। এতে ডিএসইর সার্বিক লেনদেন প্রায় ৪ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ডিএসইতে আজ মোট ৩৯৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৫৪টির। বিপরীতে কমেছে ১৭৯টির। আর ৬৫টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। দর কমা সিকিউরিটিজগুলোর মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির ৯২টি, ‘বি’ ক্যাটাগরির ৪৮টি এবং ‘জেড’ ক্যাটাগরির ৩৯টি শেয়ার ও ইউনিট রয়েছে।
অধিকাংশ সিকিউরিটিজের দর কমলেও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১১৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। গতকাল লেনদেন শেষে সূচকটির অবস্থান ছিল ৫ হাজার ১১৬ পয়েন্টে।
অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৮৬ পয়েন্টে এবং ডিএসইর বাছাই করা ৩০ কোম্পানির শেয়ার নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯৬৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
আজ ডিএসইতে মোট ৪৪৪ কোটি ৫১ টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেন চলতি বছরের ২৫ জুনের পর সর্বনিম্ন। ওইদিন এক্সচেঞ্জটিতে ৪১৩ কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছিল।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, তালিকাভূত পাঁচ ব্যাংক একীভূতকরণ, কয়েকটি ব্যাংক বর্হিভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত এবং সাম্প্রতিক সময়ের জুন ক্লোজিং কোম্পানিগুলোর খারাপ পার্ফামেন্সের কারণে বেশ কয়েকদিন ধরে বাজারে অস্থিরতার বিরাজমান। আজকে অবশ্য বাজারে প্রচুর বিক্রয় আদেশ থাকলেও ক্রেতা সংকট ছিল। এতে সূচকের মিশ্র প্রবণতা ও লেনদেন কমেছে।
দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) আজ সবগুলো মূল্যসূচক কমেছে। অধিকাংশ সিকিউরিটিজের দরপতন হওয়ার পাশাপাশি সার্বিক লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। সিএসইর সার্বিক সূচক সিএসপিআই ৩৬ পয়েন্ট কমে ১৪ হাজার ৪৬৯ পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে। আর সিএসসিএক্স সূচকটি ২৩ পয়েন্ট কমে ৮ হাজার ৮৯৮ পয়েন্টে নেমেছে।
সিএসইতে মোট ১৮২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৫৩টির দর বেড়েছে এবং কমেছে ১০৬টির। আর ২৩টির দর দিন শেষে অপরিবর্তিত ছিল। এদিকে আজ সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে এক্সচেঞ্জটিতে সার্বিক লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। গতকাল ১৪ কোটি ৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়েছিল।