অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নতুন পে স্কেল ঘোষণার জন্য জাতীয় বেতন কমিশন গঠন করলেও এই স্কেলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বর্তমান সরকার নেবে না। বরং নতুন পে কমিশনের সিদ্ধান্ত আগামী নির্বাচিত সরকার নেবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
রোববার (৯ নভেম্বর) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘পে কমিশনের বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে, তবে এটি একটি নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত। তাই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে আগামী সরকার। আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস যে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী সরকারই সরকারি কর্মচারীদের বেতন কাঠামো নির্ধারণ করবে।
আইএমএফের ঋণের কিস্তি প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আইএমএফের সঙ্গে কথা চলছে কিস্তি নিয়ে। আমাদের কাছে যেসব তথ্য আছে তা আগামী সরকারের কাছে প্যাকেজ আকারে দেওয়া হবে। তবে ঋণের ৬ষ্ঠ কিস্তির অর্থ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় আসবে না। রাজনৈতিক সরকারের কার্যক্রম দেখে কিস্তি ছাড় করবে বা সিদ্ধান্ত নেবে প্রতিষ্ঠানটি।
এসময় দেশের সার্বিক দিকের অগ্রগতি ভালো বলেও জানান ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি কমেছে, কিন্তু বাড়িভাড়া ও পরিবহন ব্যয় বেড়েছে। আমরা চেষ্টা করছি পণ্যের দাম সহনীয় মাত্রায় আনতে। তবে সার্বিকভাবে পণ্যের দাম স্বাভাবিক আছে। চালের দামও সহনীয় রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অপরিশোধিত তেল আমদানির জন্য চেষ্টা করছে সরকার। সার ও কৃষিতে প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করা হচ্ছে। আজকের ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে বিভিন্ন দেশ থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন সার ও ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
দেশের মানুষ রাজস্ব দিতে চায় না উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে।
এর আগে তিনি খাদ্যপরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, এ বছর আমন মৌসুমে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ৭ লাখ মেট্রিক টন ধান ও চাল কিনবে সরকার। এর মধ্যে সাড়ে ৫০ হাজার মেট্রিক টন ধান ও ৬ লাখ টন সেদ্ধ চাল ও ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রতি কেজি আমন ধানের সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪ টাকা আর সেদ্ধ চাল কেনা হবে ৫০ টাকা এবং আতপ চাল ৪৯ টাকা কেজি দরে। ধান ও চালের এ দাম গত বছরের তুলনায় কেজি প্রতি ৪ টাকা বেশি।
এই ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হবে আগামী ২০ নভেম্বর। ধান-চাল সংগ্রহ আগামী ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে।
জাতীয় বেতন কমিশন আগামী ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে তাদের চূড়ান্ত সুপারিশ অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জমা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। পরবর্তীতে নির্বাচিত সরকার সেই সুপারিশ পর্যালোচনা করে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেবে।