রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ২৬ হাজার কোটি টাকা বাড়ছে। জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির কারণে প্রকল্পের খরচ বাড়ছে। এখন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের খরচ বেড়ে হচ্ছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে এমন প্রস্তাব জমা পড়েছে। গত ১১ নভেম্বর এই প্রকল্পের সংশোধনী প্রস্তাবের ওপর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হয়। আগামী সপ্তাহে আবার বৈঠক হবে। এ ছাড়া প্রকল্পের বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণকাজের খরচ যৌক্তিক করার কারণে বাড়তি ব্যয়ের প্রস্তাব এসেছে। বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন পাবনার রূপপুরে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে।
কেন খরচ বাড়ছে
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বৈঠকের কার্যপত্রে বলা হয়েছে, প্রকল্পটির খরচ প্রাক্কলনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময়ে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার পরিবর্তনের বিষয়টি সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয়নি। এর ফলে বাংলাদেশি টাকায় মোট প্রকল্প ব্যয় সঠিকভাবে নির্ণয় হয়নি। মোট প্রকল্প ব্যয় সঠিকভাবে নির্ণয় করা না হলে বিদ্যুতের ইউনিটপ্রতি উৎপাদন খরচে সঠিক হিসাব জানা যাবে না। এ ছাড়া আয়–ব্যয় বিশ্লেষণও সঠিক হবে না। এসব কারণে প্রকল্পের হিসাবে বাড়তি খরচ যুক্ত করার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হয় ওই প্রতিবেদনে।
প্রকল্পের দলিল অনুসারে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে ১১ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে রাশিয়ার এক্সিম ব্যাংক। যখন প্রকল্প প্রস্তাবনা বা ডিপিপি তৈরি করা হয়, তখন ডলারের বিনিময় হার ধরা হয় প্রতি ডলারে ৮০ টাকা। এ পর্যন্ত ৮ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার ব্যবহার করা হয়েছে। এই অর্থের জন্য প্রতি ডলারের দাম গড়ে ৯৫ দশমিক ২৮ টাকা হিসেবে ধরা হয়েছে।
এখনো ঋণের ৩ দশমিক শূন্য ৯ বিলিয়ন ডলার ঋণ অব্যবহৃত অবস্থায় আছে। এই ঋণের বিনিময় হার ধরা হয়েছে ১২২ টাকা ৪০ পয়সা। এসব বিবেচনায় প্রকল্পের খরচ বাড়ানোর সুপারিশ করতে যাচ্ছে বলে জানান পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
প্রকল্পের খরচ কত
২০১৬ সালে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প নেওয়া হয়। তখন এর খরচ ধরা হয়েছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৯১ হাজার কোটি টাকা বা ১১ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে রাশিয়ার এক্সিম ব্যাংক।
এখন খরচ বাড়িয়ে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা করা হচ্ছে। খরচ বাড়ছে ২৬ হাজার ১৮১ কোটি টাকা বা ২৩ শতাংশ।
এই প্রকল্পের মেয়াদ চলতি মাসে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা এখন ২০২৮ সালের জুনে শেষ হবে। সূত্র: প্রথম আলো