মৌলভীবাজারের হোটেল-রিসোর্টগুলোতে বিশেষ ছাড়

সালাহউদ্দিন শুভ, কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) : প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি মৌলভীবাজারে ঈদের ছুটিকে আনন্দময় করে তোলার জন্য রয়েছে বহু পর্যটন কেন্দ্র। দেশ-বিদেশ থেকে আগত পর্যটক বরণে ব্যবসায়ীরা হোটেল, মোটেল, রেস্তোরাঁ ও রিসোর্টগুলে অপরূপ সাজে সজ্জিত করেছে। পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে দেয়া হচ্ছে বিশেষ অফার।

অনেক হোটেল রিসোর্ট কটেজ বুকিং এর উপর ১৫% ও ২০% এমনকি ৪০% পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছেন। মৌলভীবাজারের পাঁচ তারকা বিলাসবহুল রিসোর্ট, শ্রীমঙ্গল গ্র্যান্ড সুলতান অ্যান্ড গলফ এবং দুসাই রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা বুকিং এর উপর ৪০%, ছাড় দিয়েছে।

এছাড়া নভেম ইকো রিসোর্ট কমপ্লিমেটারি পরিষেবা এবং খাবার সহ ১০%, বালিশিড়া রিসোর্ট ২০% ছাড় দিয়ে পর্যটকদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন।

গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফ এবং নভেম ইকো রিসোর্টের কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা যায়, বুধবার পর্যন্ত প্রায় অর্ধেক রুম বুকিং হয়েছে তাদের।

অনেক হোটেল রিসোর্ট ও গেষ্ট হাউজ মালিকেরা শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ঈদের মাত্র কয়েদিন বাকি এখনো সব রুম বুকিং হয়নি। রমজান মাসে ব্যবসা ভালো হয়নি, তারা আশা করেছিলেন ঈদে হয়তো কিছু ব্যবসা করবেন কিন্তু এখনও পর্যটকের সাড়া মিলছে না।

ঈদে রুম বুকিং এর বিষয়ে শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার সাংগঠনিক সম্পাদক ও গ্রীন লিফ গেষ্ট হাউজের উদ্যোক্তা এসকে দাস সুমন বলেন, মহামারী করোনার পূর্ববর্তী সময় ও পরবর্তী সময়ের মধ্যে এই প্রথম গ্রিন লিফ গেষ্ট হাউজের মাত্র ২০% রুম বুকিং হয়েছে, গত দুই দিন ধরে তিনি গেষ্ট হাউজ, ও বিভিন্ন হোটেল মালিকদের সাথে কথা বলেছেন। অধিকাংশ হোটেল,গেষ্ট হাউজের একই অবস্থা, রুম বুকিং কম হয়েছে। অন্য বছরগুলোতে পর্যটকের চাপে রুম দিতে পারতেন না, সেখানে ঈদ চলে আসছে কিন্তু পর্যটকদের সাড়া নেই।

পর্যটকদের সাড়া না পাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি জানান, অতিরিক্ত গরম এবং শ্রীমঙ্গল ও  কমলগঞ্জের পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন না করা।

তিনি জানান, প্রাকৃতিক পর্যটন কেন্দ্র ঠিক রেখে, শহরের আশপাশে কৃত্রিম পর্যটন স্পট তৈরি করলে পর্যটকদের সমাগম বিশেষ করে দেশি পর্যটকদের সমাগম বাড়তো, এতে সার্বিকভাবে সবাই উপকৃত হতেন। তবে রুম বুকিং এর ক্ষেত্রে হোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউসের তুলনায় ব্যতিক্রম ছিল ইকো কটেজ গুলো।

এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুল ইসলাম জানান, ইতোমধ্যে শ্রীমঙ্গলের ছোট ছোট কটেজ গুলো প্রায় শতভাগ বুকিং হয়ে গেছে। তবে বড় রিসোর্ট, গেষ্ট হাউজগুলো সম্পূর্ণ বুকিং হয়নি। রিসোর্ট গেষ্ট হাউজগুলো বুকিং এর উপর ছাড় দিয়ে পর্যটকদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন। তবে ঈদের আগে শতভাগ বুকিং হওয়ার বিষয়ে তিনি আশাবাদী।

কটেজ শতভাগ বুকিংয়ের কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, নগরকেন্দ্রিক মানুষ প্রাকৃতিক পরিবেশে কুঁড়ে ঘরে নিরিবিলি থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন, তাই ইকো কটেজ গুলো বুকিং হয়ে যায়।

কমলগঞ্জ অরণ্য নিবাস ইকো রিসোর্টের পরিচালক সবুজ আহমেদ জানান, ১৫ রমজানের পর থেকে বুকিং আসেছে। পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় করা হয়েছে অরণ্য নিবাস ইকো রিসোর্ট।

শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সেলিম আহমেদ বলেন, পর্যটন কেন্দ্রে ঈদের প্রস্তুতি ভালো হলেও গেস্ট এর অবস্থা ভালো না। পর্যটকরা আসতে চেয়েও আসেনা। তাছাড়া চা-বাগানগুলোতে কাঁটা তারের বেড়া দেয়ায় পর্যটকরা দেখতে পারেননা, এটাও একটা কারণ।

তিনি বলেন, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানসহ বিভিন্ন জায়গায় গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। প্রকৃতি ধ্বংস করা হলে পর্যটকরা কী দেখবে। এছাড়াও বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন প্রতিবেদকের কাছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ শ্রীমঙ্গল জোনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী নিরাপত্তার বিষয়ে বলেন, ঈদে পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে কুইক রেসপন্স টিম তৈরি করা হয়েছে। সার্বক্ষণিক পর্যটক নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে কাজ করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

#বিডি/এসএ