বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের বিরোধীদলীয় নেতা ও ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী। তিনি বলেছেন, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে খালেদা জিয়া দেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে গেছেন। এ সময় তিনি প্রয়াত নেত্রীর পরিবারের প্রতিও সমবেদনা জানান।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেয়া এক পোস্টে রাহুল বলেন, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবরে গভীর দুঃখ প্রকাশ করছি। দীর্ঘ জনজীবনে তিনি দেশের রাজনৈতিক যাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। বার্তায় আরও বলা হয়, প্রয়াত নেত্রীর পরিবার, সমর্থক এবং বাংলাদেশের জনগণের প্রতিও আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।
এদিকে খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। নিজের ভেরিফাইড এক্স অ্যাকাউন্টে মোদি লেখেন, ‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি। তার পরিবার এবং বাংলাদেশের সকল মানুষের প্রতি আমাদের আন্তরিক সমবেদনা। সর্বশক্তিমান তার পরিবারকে এই অপূরণীয় ক্ষতি সহ্য করার শক্তি দান করুন। বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে, বাংলাদেশের উন্নয়নে এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান সর্বদা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
খালেদা জিয়ার সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্কের দিকটি তুলে ধরার পাশাপাশি তার সাথে সাক্ষাতের দুইটি ফাইল ছবি পোস্ট করে মোদি লেখেন, ‘২০১৫ সালে ঢাকায় তার সাথে আমার উষ্ণ সাক্ষাতের কথা আমি স্মরণ করছি। আমরা আশা করি তার দৃষ্টিভঙ্গি এবং উত্তরাধিকার আমাদের অংশীদারিত্বকে পরিচালিত করবে।’ সবশেষে তার আত্মার শান্তি কামনা করে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন ‘তার আত্মা শান্তিতে থাকুক।’
এছাড়া দেশটির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। মঙ্গলবার এক্স দেয়া এক পোস্টে আন্তরিক শোক জানিয়ে খালেদা জিয়াকে ‘বিশিষ্ট জননেত্রী’ বলেও অভিহিত করেন মমতা। মমতা লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিশিষ্ট জননেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আমি শোকাহত। আমি তার পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং অনুগামীদের প্রতি আমার সমবেদনা জানাই।’
এদিকে কলকাতার ইন্দো বাংলা প্রেস ক্লাবের তরফ থেকেও শোক জ্ঞাপন করা হয়েছে। ক্লাবের ফেসবুক ও এক্স হ্যান্ডেলে লেখা হয়, ‘বাংলাদেশের রাজনীতির আকাশে নক্ষত্র পতন। না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ১৯৪৫ সালে অবিভক্ত বাংলার দিনাজপুর জেলার জলপাইগুড়িতে জন্ম খালেদা জিয়ার। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছে কলকাতার ইন্দো বাংলা প্রেস ক্লাব।’
সংগঠনের মুখপাত্র দীপক দেবনাথ জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর স্মরণে আগামী তিন তারিখ প্রেস ক্লাবে স্মরণসভার আয়োজন করা হবে।
এদিকে খালেদা জিয়ার নামাজে জানাজায় অংশ নেবেন পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকায় পাকিস্তান হাইকমিশনের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে ইসহাক দার বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) ঢাকায় আসবেন। সফরকালে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে জানাজায় অংশ নেবেন এবং শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
এর আগে সকালে ইসহাক দার খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন। এক্সে দেয়া এক বার্তায় এ শোক প্রকাশ করে তিনি খালেদা জিয়ার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
এর আগে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বিএনপির চেয়ারপারসনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন। তিনি বাংলাদেশের জনগণের প্রতি খালেদা জিয়ার আজীবন ত্যাগ এবং দেশের সমৃদ্ধি ও উন্নয়নে অবদানের কথাও স্মরণ করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেয়া এক টুইটে এ শোক জানান শেহবাজ।
বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেন, খালেদা জিয়া পাকিস্তানের একজন নিবেদিতপ্রাণ বন্ধু ছিলেন এবং পাকিস্তান সরকার ও জনগণ শোকের এ মুহূর্তে বাংলাদেশের জনগণের পাশে আছে।